মায়ানমারের যুদ্ধবাজ খ্যাতির গল্প

S M Ashraful Azom
0
মায়ানমারের যুদ্ধবাজ খ্যাতির গল্প
সেবা ডেস্ক: যুদ্ধবাজ দেশ হিসাবে মায়ানমার বা বার্মার খ্যাতি বহুদিনের। আশেপাশের এমন কোন দেশ বা রাজ্য ছিলো না যাদের সাথে মায়ানমারের এক বা একাধিকবার যুদ্ধ হয়নি। শুধু মণিপুরের সাথেই মায়ানমারের যুদ্ধ হয়েছে ২০ বারের বেশি।

মণিপুরের সাথে বার্মার তিনটি বড় যুদ্ধ হয়েছিলো। প্রত্যেকবারই মণিপুরের রাজাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিলো। বার্মা আর মণিপুরের প্রথম যুদ্ধ হয় ১৭৫৫ সালে, মহারাজ ভাগ্যচন্দ্রের শাসনামলে। ভাগ্যচন্দ্র রাজা পালিয়ে আসামে আশ্রয় নেয়। তারপর আসামের সাহায্য নিয়ে আবার যুদ্ধের মাধ্যমে মণিপুর পুনরুদ্ধার করে। ওই সময় থেকেই মণিপুরিরা দেশত্যাগ করে নিরাপদ রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

বার্মা মণিপুর দ্বিতীয় যুদ্ধ হয় ১৭৫৮ সালে বার্মার রাজা অলুংপায়ার শাসনামলে। অতর্কিত আক্রমণে উদভ্রান্ত মণিপুরিরা ভারত উপমহাদেশের নানান জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তখনকার মণিপুরের রাজা চিংথাং খোমবা ওরফে জয় সিংহ বৃটিশদের কাছে আশ্রয় নেয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহায্য নিয়ে তিনি কমপক্ষে পাঁচবার মণিপুর পুনর্দখলের চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রত্যেকবার পরাজিত হয়ে ফিরে আসেন। শেষবার ১৭৮২ সালের যুদ্ধে বার্মা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন বার্মা আর মণিপুরের সাথে যুদ্ধ করেনি।

তবে ১৮১৯ সালে বার্মা আরেকবার মণিপুরের দখল নেয়। এই যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি এবং জীবনহানীর পরিমান ছিলো অত্যন্ত বেশি। এসময় বর্মিজরা মণিপুরিদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালালে মণিপুর প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। ১৮১৯ সাল থেকে ১৮২৬ সাল, এই সাত বছর মণিপুর প্রায় জনশূন্য ছিলো। জনশূন্য ওই সাত বছরকে মণিপুরিরা এখনও স্মরণ করে ‘চহি তরেৎ খুনতাকপা’ হিসেবে। এর অর্থ ‘সাত বছরের জনশূন্য অধ্যায়’। মণিপুরিদের কাছে ‘চহি তরেৎ খুনতাকপা’ অত্যন্ত বেদনার ও দুঃখের স্মৃতিবহ। পরে ১৮৯১ সালে বৃটিশদের সহায়তায় মণিপুরিরা নিজেদের রাজ্য পুণরুদ্ধার করে।

এই হচ্ছে বার্মা বা বর্তমান মায়ানমার। এদের কাছে জাতি, ধর্ম, সভ্যতা কোনকালেই শ্রদ্ধার কোন বিষয় ছিলো না।  বরং এই বর্মিজদের কাছে আধিপত্য ও দখলদারিত্বই বড় ছিলো সবসময়।- তথ্য: কৃষিকথা

⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top