সেবা ডেস্ক: দেশের রাজনীতিতে লাখো ভক্ত ও অনুরাগীকে শোকসাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। গতকাল ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পরিবারের ঘনিষ্ঠ ও দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য আনোয়ারুল কবির তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
আগামীকাল ৫ ডিসেম্বর শনিবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার লাশ দেশে আনা হবে বলেও জানান তিনি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
গত বছরের ৩ জুলাই চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ বিমানের একটি ফাইটে থাইল্যান্ডে যান আশরাফ। তার শারীরিক অবস্থা সঙ্গীন-এই অবস্থাতেও তাকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। আর তিনি জয়ীও হন। গতকাল শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি সৈয়দ আশরাফ। শপথের জন্য সময় চেয়ে স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন আশরাফ। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক : সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বলেন, সৈয়দ আশরাফের মৃত্যু বাংলাদেশর রাজনীতিতে এক অপূরণীয় তি। গণতন্ত্র, রাজনীতি ও সমাজ উন্নয়নে তার অবদান মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করে রাষ্ট্রপতি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পৃথক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন মহৎপ্রাণ, সৎ, নীতিবান, দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো।
এ ছাড়াও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে আরো গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিরোধী দলীয় নেতা ও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি।
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপি, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।