প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন
সফল রৌমারীতে ৩৫টি আনন্দ স্কুলে পিইসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ
|
গত ২০১৪সালে রৌমারী উপজেলার প্রত্যান্তঞ্চলে মোট ৫৮টি আনন্দ স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম শ্রেণী হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত একটানা ৫বছর মেয়াদী প্রকল্প চালু করা হয়। প্রতিটি স্কুলে একজন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৫৮টি আনন্দ স্কুল থেকে ২০১৮ সালে পিইসি পরীক্ষায় মোট ১হাজার ৪৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এর মধ্যে শতভাগ পাশ করা স্কুলগুলো হচ্ছে চান্দারচর আনন্দ স্কুল, খাটিয়ামারী আনন্দ স্কুল, সুতিরপাড় আনন্দ স্কুল, মন্ডলপাড়া আনন্দ স্কুল, সবুজপাড়া আনন্দ স্কুল, যাদুরচর আনন্দ স্কুল, ধনারচর আনন্দ স্কুল, পাখিউড়া আনন্দ স্কুল, সোনাপুর আনন্দ স্কুল,পূর্ব পাখিউড়া আনন্দ স্কুল, দক্ষিণ টাপুরচর আনন্দ স্কুল, বাগুয়ারচর আনন্দ স্কুল, তিনতেলি আনন্দ স্কুল, বাঘমারা আনন্দ স্কুল, চরকাজাইকাট আনন্দ স্কুল, চর ইটালুকান্দা আনন্দ স্কুল, বালুরগ্রাম আনন্দ স্কুল, টাপুরচর আনন্দ স্কুল, চর ধনতলা আনন্দ স্কুল, উত্তর আমবাড়ি আনন্দ স্কুলসহ মোট ৩৫টি স্কুলের শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। ১হাজার ৪৫ জন পিইসি পরীক্ষার্থীয় অংশ গ্রহন করে এবং ৯’৫৭জন পাশ করে। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৮৮জন।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলাটি চরাঞ্চল এলাকা। দূর্গম, প্রত্যান্ত অঞ্চলের নিকটতম কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিশু প্রাথমিক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়। অপর দিকে অনেক শিশু অত্র এলাকার কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও দূবর্তী ও অভাব অনাটনের কারনে তারা ঝড়েপড়ে। ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় দিনে দিনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও পরপর তিনবার গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা মোতাবেক ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীদের জন্য এই আনন্দ স্কুল চালু করেন। যাতে কোন শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই, পোশাক, শিক্ষা উপকরন, পরীক্ষার ভাতা ও উপবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। আনন্দ স্কুলের ঘরের জন্য প্রতিমাসে ঘর ভাড়া দেওয়া হত। নিয়োগকৃত শিক্ষকের জন্য প্রতিমাসে ৫হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়। আনন্দ স্কুল পরিদর্শনের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি ও প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ জন্য তাদেরকে প্রতিমাসে সম্মানীভাতা দেওয়া হয়। তারা সব সময়ে আনন্দ স্কুলগুলো পরিদর্শন করেন ও পাঠদানের পরামর্শ দিতেন।
আনন্দ স্কুলের ৫বছর মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই শিক্ষকরা হতাশায় পড়েছেন। খাটিয়ামারী আনন্দ স্কুলের শিক্ষক মোছা. ববিতা খাতুন, চরবামনের চর আনন্দ স্কুলের শিক্ষক মোছা. তৌহিদা খাতুন ও চান্দার চর আনন্দ স্কুলের মোছা.রোকছানা খাতুন জানান, আমার স্কুলে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এসবের অবদান তিনবার সফল প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার। তিনি এ আনন্দ স্কুল চালু না করলে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকত। অপরদিকে আনন্দ স্কুলের ৫বছর মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। আনন্দ স্কুলটি পূণরায় চালু করার জন্য বর্তমান সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরদাবী করছি।
আনন্দ স্কুলের পুল শিক্ষক মো. আতাউর রহমান, মো. ইদ্রিস আলী. মো. খয়রাত হোসেন জানান, অন্যান্য স্কুলের চেয়ে আনন্দ স্কুলের শিক্ষারমান অনেক ভালো। ৩৫টি ¯ু‹লের শিক্ষার্থী শতভাগ পাশ করেছে। প্রকল্পটি আবারো চালু করলে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থী শুন্যের কোঠায় আসবে।
আনন্দ স্কুলের উপজেলা কো-অডিনেটর মো. আবু রায়হান বলেন, ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে উঠা আনন্দ স্কুলের কায্যক্রম ভালোই চলছিল। রৌমারী উপজেলায় আনন্দ স্কুলের পাশের হার ৯৬%। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, আনন্দ স্কুলের ফলাফল অনেক ভালো। প্রকল্পটি পূনরায় চালু করা হলে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাবে, পাশাপাশি আনন্দ স্কুলের নিয়োগকৃত শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
⇘সংবাদদাতা: রৌমারী প্রতিনিধি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।