জামালপুরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত গত সাতদিনে ২৪৮ জন

S M Ashraful Azom
0
জামালপুরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত গত সাতদিনে ২৪৮ জন
ছবি-ডেইলি বাংলাদেশ
মিঠু আহমেদ, জামালপুর ॥ জামালপুরে ঠান্ডাযত বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েক দিনে জামালপুর সদর হাসপাতালসহ জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪৮ জন বিভিন্ন বয়সের ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই গ্রামা ও চরাঞ্চলের বৃদ্ধ, নারী ও শিশু। শীতের প্রকোপে ঠান্ডা বাসি খাবার এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি খাবারে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার কারণেই ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার পর্যন্ত গত সাতদিনে জামালপুর সদর হাসপাতালে জন ১২০ জন, মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জন, মাদারগঞ্জে ৬ জন, সরিষাবাড়ীতে ৪৬ জন, ইসলামপুরে ২৫ জন, দেওয়ানগঞ্জে ১৫ জন এবং বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসরা জানিয়েছেন, ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন রোগীরা। ভর্তি হওয়া রোগীরা দুই একদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। জেলার কোথাও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী মারা যায়নি বলে জানা যায়।

শনিবার দুপুরে জামালপুর সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, ডায়রিয়া আক্রান্ত আটজন রোগী ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ছয়জনই শিশু। কর্তব্যরত নার্সরা ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের কান্দারপাড়া গ্রাম থেকে মনিরা আক্তার তার দুই বছরের সন্তান মাহিনকে ভর্তি করেছেন গত বৃস্পতিবার। গত দুই মাসে এই শিশুটি এ নিয়ে দুইবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। শিশুটির মা মনিরা আক্তার বললেন, ‘স্যালাইন খাওয়াইতাছি। ডাক্তারেও দেখে গেছে। কিন্তু কমতাছে না।’ জামালপুর সদরের হরিপুর গ্রাম থেকে দরিদ্র হাফিজুর মিয়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তার নয়মাস বয়সী ছেলে জুয়াবয়দুলকে ভর্তি করেছেন দুই দিন ধরে। চিকিৎসা নেওয়ার পর কমতে শুরু করেছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্সরা জানালেন, এখানে রোগীরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা পাচ্ছে।

জামালপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো.শফিকুজ্জামান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ‘এই হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত। সম্প্রতি ২৪টি নতুন বিছানা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় সব রকমের নতুন আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছে। স্যালাইন থেকে শুরু করে যাবতীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা পেয়ে থাকে রোগীরা।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রচন্ড শীতের কারণেই মূলত: ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। শীতের কারণে ঠান্ডা খাবারে ভাইরাস সংক্রমিত হয় বেশি। সাধারণত গ্রামের নারী ও শিশুরাই এবার বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মধ্যেই বাসি বা ঠান্ডা খাবার খাওয়া এবং পানি ঠান্ডার কারণে খাবারের আগে হাত না ধোয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ফলে তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের দিনের খাবার সব সময় গরম করে এবং খাবারের আগে ভালো করে হাত ধুয়ে খেলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে।’
⇘সংবাদদাতা: মিঠু আহমেদ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top