টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের সংসদীয় নির্বাচনী ৮টি আসনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি ৫১ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন হেভিওয়েট ৬ প্রার্থীসহ মোট ৩৮জন। এছাড়াও বিজয়ীদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন ৫ প্রার্থী। যদিও প্রতীক বরাদ্দ পর্যান্ত জেলার ৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৩জন। তবে নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানীর শেষদিন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) ও টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি আলহাজ¦ আবুল কাশেমের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় মোট প্রার্থীর সংখ্যা হয় ৫১ জন। এছাড়াও অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ১২টি উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় ৮টি আসনে ভোট পড়েছে শতকরা ৮৫.৮২ ভাগ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী প্রতিটি আসনে মোট প্রাপ্ত ভোটের এক অষ্টমাংশের কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সে হিসেবে টাঙ্গাইলের আটটি আসনে মোট ৫১ প্রার্থীর মধ্যে ৩৮ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রতিটি প্রার্থী জামানত ফি ছিল ২০ হাজার টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামানত হারানো হেভিওয়েট ৬ প্রার্থীরা হলেন, টাঙ্গাইল-১ (ধনবাড়ী-মধুপুর) আসনের ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী ছিলেন মধুপুর পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত মেয়র শহিদুল ইসলাম সরকার শহীদ, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী ছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন আওয়ামীলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে ইতিপূর্বে ২০০১ সালের অষ্টম, ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চতুর্থ দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামীলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এর ছোট ভাই মাথাল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকীসহ মহাজোট মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয়পার্টির প্রার্থী সফিউল্লাহ আল মুনির। এছাড়াও জেলার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে ধানেরশীষ প্রতীকের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রার্থী মো. লিয়াকত আলী। তিনি ভোট পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৮৮টি। যদিও তার নির্বাচনী আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২ হাজার ৬৭২ ভোট। তবে তিনি জামানত রক্ষার প্রয়োজনীয় ভোটের পরিমান থেকে মাত্র ১ হাজার ৭১৬ বেশি পেয়ে প্রার্থীর জামানত হারানোর লজ্জা থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে সর্বোচ্চ ৬ বার সংসদ সদস্য হওয়াসহ এরশাদ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। যদিও আসনটি পুনরুদ্ধারে দলটির প্রার্থীতা পান তিনি। তবে তিনিও বিজয়ের সাফল্য আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে তিনি ভোট পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৯৯২টি। এছাড়াও তার নির্বাচনী আসনে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ৩৪ হাজার ৯৭১ ভোট।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী। তবে তিনি বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি থাকলেও মাত্র ২ হাজার ৯৮৮ ভোট বেশি পেয়ে জামানত রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৯৮৮ ভোট। যদিও তার আসনে প্রার্থীর জামানত রক্ষার জন্য ভোট প্রয়োজন ছিল ৪১ হাজার ৫৭১টি।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে ধানেরশীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। বিজয়ী না হলেও জেলার দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্তির দাবিদার তিনি। তিনি পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৯৪৯টি ভোট। এছাড়াও তার আসনে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ভোট প্রয়োজন ছিল ৩৫ হাজার ২০৮টি।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে ধানেরশীষ প্রতীকে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রার্থী ছিলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা কাদের সিদ্দিকীর কণ্যা ব্যারিস্টার কুঁড়ি সিদ্দিকী। আসনটির প্রথম নারী সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নবাগত এই প্রার্থী পরাজিত হলেও ভোট পেয়েছেন ৭১ হাজার ১৪৪টি। তবে তার নির্বাচিনী আসনে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ভোট প্রয়োজন ছিল ৩৫ হাজার ২০৮টি।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে পাওয়া প্রতিটি আসেন প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট ঃ টাঙ্গাইল-১ (ধনবাড়ী-মধুপুর) আসনটিতে বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তার প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৮০ হাজার ২৯২টি। দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটির মোট ভোট কেন্দ্র সংখ্যা ১৩৯টি আর মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬শ ৮ জন। এর মধ্যে মধুপুর উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ৮শ ৫৩ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭ হাজার ৬শ ৬১ জন আর মহিরা ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ১শ ৯২ জন। ধনবাড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪০ হাজার ৭শ ৬৫ জন। এছাড়াও অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আসনটির মোট প্রাপ্ত ভোট ৩ লাখ ১ হাজার ৮’শ। টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৫ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৪ জন প্রার্থীই হারিয়েছেন জামানত। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৬৪ হাজার ৯৯১। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে শতকরা ৮২.২৩ ভাগ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৭ হাজার ৭২৫ ভোট।
তবে জামানত হারানো ওই প্রার্থীরা ভোট পেয়েছেন বিএনপির শহিদুল ইসলাম সরকার(ধানের শীষ) ১৬ হাজার ৪৪০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবু মিল্লাত হোসেন (আম) ৭৩২, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আশরাফ আলী (হাতপাখা) ২ হাজার ৫২৭, জাকের পার্টির সালামত হোসাইন খান (গোলাপফুল) ১ হাজার ৮০৯ ভোট পান। এ কারণে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোটমনির পেয়েছেন ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৮ ভোট। এ আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০। আসনটিতে মোট ১৩২টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতকরা ৯০.৪১ ভাগ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৯ হাজার ১৬৬ ভোট। জামানত রক্ষার প্রয়োজনীয় ভোট প্রাপ্ত না হওয়ার ফলে আসনটির ৫ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
তবে এ আসনের জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমান, বিএনপির সুলতান সালাউদ্দিন টুকু(ধানের শীষ) ৯ হাজার ৮৮৯, বিকল্প ধারার প্রার্থী মুনিরুল ইসলাম (কুলা) ১৪২, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী এসএম শামছুর রহমান (হাতপাখা) ১ হাজার ৪৪৫, জাকের পার্টির প্রার্থী এনায়েত হক মঞ্জু (গোলাপফুল) ৯৭৭, কমিউনিস্ট পার্টির জাহিদ হোসেন খান (কাস্তে) ৯২৭ ভোট পান। যার ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৭ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ¦ আতোয়ার রহমান খান পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৩৭ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৬জন। আসনটির মোট ১১৯টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতকরা ৮১.৬৫ ভাগ। এ কারণে প্রতিজন প্রার্থীর জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২ হাজার ৩০১ ভোট। তবে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ার ফলে আসনটির ওই ৬ জন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
আসনটির জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ (ধানের শীষ) ৯ হাজার ১২২, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী এসএম চাঁন মিয়া (আম) ১ হাজার ৩৯০, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী আবু হানিফ (ফুলের মালা) ২৪৪, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী রেজাউল করিম (হাতপাখা) ৩ হাজার ১২৪, জাকের পার্টির প্রার্থী খলিলুর রহমান (গোলাপফুল) ১ হাজার ৯০২, বিএনএফ এর প্রার্থী আতাউর রহমান খান (টেলিভিশন) ১৯০ ভোট পান। প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৭ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী পেয়েছেন ২ লাখ ২৪ হাজার ১২ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১১ হাজার ৮৮জন। আসনটির ১০৮টি কেন্দ্রে শতকরা ভোট পড়েছে ৮৫.০৭ ভাগ। তবে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২ হাজার ৬৭২ ভোট। প্রয়োজনীয় পরিমান ভোট না পাওয়ায় ৫ জন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী (ট্রাক) ৩১১, জাতীয় পার্টি-জেপি’র প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী (বাই সাইকেল) ১৫৪, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী মির্জা আবু সাঈদ (হাতপাখা) ১ হাজার ৬৮৩, জাকের পার্টির প্রার্থী মোন্তাজ আলী (গোলাপফুল) ৫০১, জাতীয় পার্টির সৈয়দ মুশতাক হোসেন (লাঙ্গল) ৩৩০ ভোট পান। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী (ট্রাক), জাতীয় পার্টি-জেপি’র প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী (বাই সাইকেল) ও জাতীয় পার্টির সৈয়দ মুশতাক হোসেন (লাঙ্গল) ভোটের আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৮ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ¦ ছানোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬২ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৩৮জন। এ আসনে মোট ১২৭টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৮৬.০৮ ভাগ। এ কারণে প্রতিজন প্রার্থীর জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৪ হাজার ৯৭১ ভোট। তবে প্রয়োজনীয় ভোট প্রাপ্ত না হওয়ায় আসনটির ৬ জন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
আসনটির জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী (মাথাল) ২৮ হাজার ৬৬০, মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির সফিউল্লাহ আল মুনির(লাঙ্গল) ১৮ হাজার ৩৪১, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী আবু তাহের (আম) ৯৭, বিএনএফ প্রার্থী শামীম আল মামুন (টেলিভিশন) ৯১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী খন্দকার ছানোয়ার হোসেন (হাতপাখা) ৩ হাজার ৮০৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সৈয়দ খালেকুজ্জামান মোস্তফা (বটগাছ) ৪১৫ ভোট পান। এ কারণে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৮ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু পেয়েছেন ২ লাখ ৮০ হাজার ২২৭ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯০হাজার ৪৪৬জন। এ আসনে মোট ১৪১ টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতকরা ৮৬.০৯ ভাগ। এ কারণে প্রতিজন প্রার্থী জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৪১ হাজার ৫৭১ ভোট। প্রয়োজনীয় ভোট প্রাপ্ত না হওয়ার ফলে আসনটির ৬ জন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম (ট্রাক) ২ হাজার ৮০৭, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মামুনুর রহমান (আম) ২৪৯, বিএনএফ প্রার্থী সুলতান মাহমুদ (টেলিভিশন) ৩৩৬, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আখিনুর মিয়া (হাতপাখা) ৪ হাজার ৩২৪, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (ফুলের মালা) ১৭২ ভোট পান। প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম (সিংহ) প্রতীক বরাদ্দের পরই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. এশাব্বর হোসেন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৯১ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৬৭৩জন। এ আসনে মোট ১১৩টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতকরা ৮৭.০৭ ভাগ। এ কারণে প্রতিজন প্রার্থীর জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ৩১ হাজার ৭৭৮ ভোট। প্রয়োজনীয় ভোট প্রাপ্ত না হওয়ায় আসনটির চারজন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনের জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, জাতীয় পার্টির জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙ্গল) ৩১৭, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম (হাতপাখা) ১ হাজার ৯৭, খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সৈয়দ মজিবর রহমান (দেয়ালঘড়ি) ১১৩, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থী রূপা রায় চৌধুরী (বাঘ) ১৫৮ ভোট পান। প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৫ জন প্রার্থী। আসনটির বিজয়ী নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম পেয়েছেন ২ লাখ ৭ হাজার ৬৭৯ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৬জন। এ আসনে মোট ১২২ টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতকরা ৮৮ ভাগ। এ কারণে প্রতিজন প্রার্থীর জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ৩৫ হাজার ২০৮ ভোট।
তবে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় আসনটির ৩ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এ আসনের জামানত হারানো প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট, জাতীয় পার্টির কাজী আশরাফ সিদ্দিকী (লাঙ্গল) ১ হাজার ৩০৫ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আব্দুল লতিফ মিয়া (হাতপাখা) ১ হাজার ২৬০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শফি সরকার (আম) ২৭৭ ভোট পান। প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় তাদেরও জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
এ জামানত বাজেয়াপ্তের সংখ্যা নিশ্চিত করাসহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ.এইচ.এম কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনী নীতিমালানুসারে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষে ভোট বর্জন বা সরে দাঁড়ানোর কোন সুযোগ নেই, যদি এ স্বত্তেও কোন প্রার্থী ভোট বর্জন বা সরে দাঁড়ান তাহলেও নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হিসেবেই গণ্য করা হবে। এছাড়াও নির্বাচনী ফলাফলে তার ভোটও গণনা হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও জেলা নির্বাচন কমিশনে এখনও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জামানত বাজেয়াপ্তের চূড়ান্ত তালিকা হয়নি। জামানত ফেরৎ চেয়ে আবেদনের পরই ওই তালিকা চূড়ান্ত হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য,গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।