সরিষাবাড়ীতে মুরগির খামারের বর্জ্যে পরিবেশ বিপর্যয়

S M Ashraful Azom
0
সরিষাবাড়ীতে মুরগির খামারের বর্জ্যে পরিবেশ বিপর্যয়

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি: জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র মুরগির খামার স্থাপন হওয়ায় বিষাক্ত বর্জ্য ও দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপর্যয় হয়ে ওঠছে। বিষাক্ত বর্জ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। নষ্ট হচ্ছে আবাদি জমির উর্বরতা।

প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানায়, উপজেলায় ২২৩টি লেয়ার ও ২০১টি বয়লার মুরগির খামার খামার রয়েছে। যা পৌরসভা, পোগলদিঘা ও ডোয়াইল ইউনিয়নে বেশি। এ সব খামার থেকে দৈনিক প্রায় ৫০ মে. টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। যা মাসে দেড় সহস্রাধিক মে. টন। বসতবাড়ির কাছে খামার স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা ও নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য সংরক্ষণের নিয়ম কেউ মানেন না। অধিকাংশ খামারে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই।

পোগলদিঘা ইউনিয়নের রুদ্র বয়ড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আঃ মালেক রাঙা চার হাজার লেয়ার মুরগির বিষ্টা ফেলেন জনবসতির পাশে ছোট একটি গর্তে। দু-তিন দিনেই ভরাট হয়ে বিষ্টাগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। এখানে প্রায় ৫০টি পরিবার দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বাস করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আনসার, আকতার, আঃ আজিজ, আলাউদ্দিন, সেলিম জাবেদ, ছানোয়ার, দেলোয়ার, ফারুক ও শফিক অভিযোগ করেন, ‘তাঁদের বসবাস অনুপযোগী হয়ে ওঠেছৈ। স্বাস্থ্য, ফসল ও পরিবেশের ক্ষতি বাড়ছে। খামার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কোথাও অভিযোগ করে লাভ হয় না।’ 

খামারি আঃ মালেক রাঙা জানান, ‘আমার জমিতে খামার করে আমার জমিতেই বিষ্ঠা ফেলি। দুর্গন্ধরোধে কেরোসিন ও ফিনাল দিই। অন্যের সমস্যা হবে কেন?

ভূক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মুরগির বিষ্ঠা মাটিচাপা দেয়ার কথা থাকলেও খামার মালিকরা তা না মেনে রাস্তার পার্শ্বে বা জনবসতির স্থানে ফেলে রাখেন। বিভিন্ন খামারে প্রকাশ্যে ডিমের খোসা, নষ্ট ডিম ও মরা মুরগি ফেলে রাখা হয়। ফলে স্থানীয়দের নানা সমস্যায় থাকতে হচ্ছে। এছাড়া আবাদি জমিতে বিষাক্ত বর্জ্য মিশে নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মমতাজ উদ্দিন রাকিব বলেন, ‘বর্জ্যরে দুর্গন্ধে ফুসফুস বা শ্বাসনালীর ক্ষতি হয়। বর্জ্যমিশ্রিত দূষিত পানির কারণে শরীরে বিভিন্ন চর্মরোগ আক্রান্ত হয়। যা ছোঁয়াচে ও মহামারী হতে পারে।’

এদিকে সরিষাবাড়ী উপজেলায় অনেকগুলো মুরগির খামার থাকায় সরকারিভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা বায়োগ্যাস কারখানা স্থাপনের দাবি সচেতনমহলের। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে নিয়মিত সচেতনতা ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণেরও দাবি সংশ্লিষ্টদের।

বয়ড়া বাজারের মেসার্স পান্ন্া বয়োগ্যাসের সত্বাধিকারী হুমায়ূন কবীর জানান, ‘মুরগির বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু খামারিরা তাতে আগ্রহ দেখান না।’ উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. রৌশনী আকতার জানান, ‘চলাচলের রাস্তা ও বসতবাড়ির ২০০ গজের মধ্যে মুরগির খামারের বর্জ্য ফেলা নিষেধ।’ 

বর্জ্যরে দুর্গন্ধরোধে সরকারিভাবে খামারিদের ফিনাল ও কোরোসিন তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও তিনি জানান। ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুর-এ-আলম বলেন. ‘খামারের বর্জ্যে পরিবেশ দূষণের কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

⇘সংবাদদাতা: সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top