জাকারিয়া জাহাঙ্গির: জামালপুর জেলার গৌরব সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিস্থ দেশের বৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল)। বর্তমানে যা দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহৎ সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় পরিচালিত বিসিআইসি‘র নিয়ন্ত্রনাধীন এ কারখানাটি কেপিআই-১ মানসম্পন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দৈনিক ১৭০০ মে. টন ইউরিয়া উৎপাদনে সক্ষম এ কারখানা বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্চলের ২০ জেলার সারের চাহিদা পুরন করে আসছে।
জেএফসিএল সুত্র জানায়, বিসিআইসি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল তারাকান্দিতে কারখানাটি স্থাপনের স্থান নির্ধারন করে এবং এলাকাটি যমুনা নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত বলে ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে যমুনা ফার্টিলাইজার কোং লি. নামকরণ করে। শুরুতে মুলত: দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের সারের চাহিদা পুরণের জন্য এ কারখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানার প্রকল্প এলাকার জন্য ফ্যাক্টরিতে ৭৬ একর, আবাসিক কলোনি ৬১ একর, জেডি ২১ একর, ভারী যানবাহনের রাস্তা ২৩ একর, রেলওয়ে ১২ একর, ফ্যাক্টরির সামনে সাত একরসহ মোট ২০০ একর জমি ব্যবহৃত হয়েছে।
জাপানের মেসার্স মিটসুবিসি হ্যাভি ইন্ড্রাস্ট্রিজ লি. এবং মেসার্স মিটসুবিসি করপোরেশনের জেনারেল কন্টাক্ট্রর লাম্প-সাম্প টার্নকি-৮৮ যৌথভাবে এ কারখানা স্থাপনের কাজ করে। আর্থিক সহায়তায় ছিল জাপান (ওইসিএফ) ও বাংলাদেশ সরকার (এডিপি/বিসিআইসি)। এরমধ্যে বিদেশি সহায়তা ৯৩৫৫১.৮৮ লাখ এবং বাংলাদেশ সরকার ৩২৭০২.৬৭ লাখ, মোট ১২৬২৫৪.৫৫ লাখ টাকা কারখানার নির্মান ব্যয় হয়। কারখানায় ডেনমার্ক প্রসেসে এ্যামোনিয়া, ইতালি প্রসেসে ইউরিয়া ও নেদারল্যান্ড প্রসেসে হাইড্রো-এগ্রি উৎপাদন শুরু হয়। এই প্রযুক্তিতে যমুনা সার কারখানা সার উৎপাদন শুরু করে ১৯৯২ সালে ১ জুলাই থেকে। আর সেই সময় থেকেই কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করে আসছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিঃ (টিজিটিডিসিএল)। কারখানায় দৈনিক উৎপাদন মাত্রা ১ হাজার ৭৮ মে. টন এ্যামোনিয়া ও ১ হাজার ৭০০ মে. টন ইউরিয়া। কারাখানায় স্বাভাবিক উৎপাদনে প্রতিদিন ৩৭০ পিএসআই চাপ গ্যাস লাগে ।
১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৯২ সালে। বর্তমানে এর নিজস্ব গুদামে ধারণ ক্ষমতা বাল্ক এরিয়া ৫০ হাজার মে. টন, ব্যাসেজড ১৪ হাজার মে. টন ও তরল এ্যামোনিয়া ১০ হাজার মে. টন। প্রতিদিন প্রায় ব্যাগ রেলপথে ৩৬০০ মে. টন, ট্রাকে ২৮৮০ মে. টন ও ১৪৪০ মে. টন সার লোডিং দেওয়া হয়।
একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অধীনে ৬ জন মহাব্যবস্থাপকসহ (জিএম) কারখানার জনবল রয়েছে ২৯০ জন অফিসার, ২৯৪ জন স্টাফ ও ৩৭২ জন শ্রমিক। রয়েছে আনসারসহ নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। কারখানায় রয়েছে সুবিশাল ও আধুনিক আবাসিক কলোনি, একটি অফিসার্স ক্লাব, লেডিস ক্লাব, আধুনিক অডিটোরিয়ামসহ টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল মাঠ ও মিনিপার্ক। অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, সরকারী স্কুল এন্ড কলেজ, মাদরাসা, চাকরিজীবি সমবায় সমিতি, একাধিক আধুনিকমানের মসজিদ, লটারী হজ্ব স্কীম, স্টাফ বাসসহ আধুনিক বিভিন্ন সুবিধা। এ কারখানাকে ঘিরে নিরাপত্তার জন্য গড়ে উঠেছে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও আনসার প্লাটুন। এলাকায় কয়েকটি ব্যাংক-বীমা, জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়ন (সিবিএ), ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরি মালিক সমিতি, জেডিঘাট মালিক সমিতি, সার ডিলার সমিতি, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি, শ্রমিক পরিবহন সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে কারখানাকে ঘিরে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছু অপকর্মের থাকলেও কারখানার ঐতিহ্য অর্থনৈতিক অবস্থাই এলাকার চালচিত্র পাল্টে দিয়েছে। জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারন সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, ‘এলাকার জীবনমান পরিবর্তনে যমুনা সার কারখানাটি জেলার গৌরব। শত প্রতিকুলতার মধ্যেও যমুনা সার কারখানা ২০টি জেলায় কৃষকের মুল চাহিদা সারের ঘাটতি পুরন ও দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষায় অবদান রেখে চলেছে।’
⇘সংবাদদাতা: জাকারিয়া জাহাঙ্গির
জেএফসিএল সুত্র জানায়, বিসিআইসি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল তারাকান্দিতে কারখানাটি স্থাপনের স্থান নির্ধারন করে এবং এলাকাটি যমুনা নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত বলে ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে যমুনা ফার্টিলাইজার কোং লি. নামকরণ করে। শুরুতে মুলত: দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের সারের চাহিদা পুরণের জন্য এ কারখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানার প্রকল্প এলাকার জন্য ফ্যাক্টরিতে ৭৬ একর, আবাসিক কলোনি ৬১ একর, জেডি ২১ একর, ভারী যানবাহনের রাস্তা ২৩ একর, রেলওয়ে ১২ একর, ফ্যাক্টরির সামনে সাত একরসহ মোট ২০০ একর জমি ব্যবহৃত হয়েছে।
জাপানের মেসার্স মিটসুবিসি হ্যাভি ইন্ড্রাস্ট্রিজ লি. এবং মেসার্স মিটসুবিসি করপোরেশনের জেনারেল কন্টাক্ট্রর লাম্প-সাম্প টার্নকি-৮৮ যৌথভাবে এ কারখানা স্থাপনের কাজ করে। আর্থিক সহায়তায় ছিল জাপান (ওইসিএফ) ও বাংলাদেশ সরকার (এডিপি/বিসিআইসি)। এরমধ্যে বিদেশি সহায়তা ৯৩৫৫১.৮৮ লাখ এবং বাংলাদেশ সরকার ৩২৭০২.৬৭ লাখ, মোট ১২৬২৫৪.৫৫ লাখ টাকা কারখানার নির্মান ব্যয় হয়। কারখানায় ডেনমার্ক প্রসেসে এ্যামোনিয়া, ইতালি প্রসেসে ইউরিয়া ও নেদারল্যান্ড প্রসেসে হাইড্রো-এগ্রি উৎপাদন শুরু হয়। এই প্রযুক্তিতে যমুনা সার কারখানা সার উৎপাদন শুরু করে ১৯৯২ সালে ১ জুলাই থেকে। আর সেই সময় থেকেই কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করে আসছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিঃ (টিজিটিডিসিএল)। কারখানায় দৈনিক উৎপাদন মাত্রা ১ হাজার ৭৮ মে. টন এ্যামোনিয়া ও ১ হাজার ৭০০ মে. টন ইউরিয়া। কারাখানায় স্বাভাবিক উৎপাদনে প্রতিদিন ৩৭০ পিএসআই চাপ গ্যাস লাগে ।
১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৯২ সালে। বর্তমানে এর নিজস্ব গুদামে ধারণ ক্ষমতা বাল্ক এরিয়া ৫০ হাজার মে. টন, ব্যাসেজড ১৪ হাজার মে. টন ও তরল এ্যামোনিয়া ১০ হাজার মে. টন। প্রতিদিন প্রায় ব্যাগ রেলপথে ৩৬০০ মে. টন, ট্রাকে ২৮৮০ মে. টন ও ১৪৪০ মে. টন সার লোডিং দেওয়া হয়।
একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অধীনে ৬ জন মহাব্যবস্থাপকসহ (জিএম) কারখানার জনবল রয়েছে ২৯০ জন অফিসার, ২৯৪ জন স্টাফ ও ৩৭২ জন শ্রমিক। রয়েছে আনসারসহ নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। কারখানায় রয়েছে সুবিশাল ও আধুনিক আবাসিক কলোনি, একটি অফিসার্স ক্লাব, লেডিস ক্লাব, আধুনিক অডিটোরিয়ামসহ টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল মাঠ ও মিনিপার্ক। অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, সরকারী স্কুল এন্ড কলেজ, মাদরাসা, চাকরিজীবি সমবায় সমিতি, একাধিক আধুনিকমানের মসজিদ, লটারী হজ্ব স্কীম, স্টাফ বাসসহ আধুনিক বিভিন্ন সুবিধা। এ কারখানাকে ঘিরে নিরাপত্তার জন্য গড়ে উঠেছে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও আনসার প্লাটুন। এলাকায় কয়েকটি ব্যাংক-বীমা, জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়ন (সিবিএ), ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরি মালিক সমিতি, জেডিঘাট মালিক সমিতি, সার ডিলার সমিতি, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি, শ্রমিক পরিবহন সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে কারখানাকে ঘিরে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছু অপকর্মের থাকলেও কারখানার ঐতিহ্য অর্থনৈতিক অবস্থাই এলাকার চালচিত্র পাল্টে দিয়েছে। জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারন সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, ‘এলাকার জীবনমান পরিবর্তনে যমুনা সার কারখানাটি জেলার গৌরব। শত প্রতিকুলতার মধ্যেও যমুনা সার কারখানা ২০টি জেলায় কৃষকের মুল চাহিদা সারের ঘাটতি পুরন ও দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষায় অবদান রেখে চলেছে।’
⇘সংবাদদাতা: জাকারিয়া জাহাঙ্গির
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।