ব্লু-ইকোনোমি অর্জনে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ

S M Ashraful Azom
0
ব্লু-ইকোনোমি অর্জনে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ

সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতার সৌজন্যে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। বিরোধ অবসানের পর দেশের আয়তনের ৮০ শতাংশের মতো বিশাল সমুদ্র এলাকা লাভ করে বাংলাদেশ, যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য খুবই গৌরব ও আনন্দের বিষয়।

তাই শেখ হাসিনা সরকার বর্তমানে ব্লু- ইকোনোমি বিষয়টির উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই অর্থনীতিকে সমুদ্র অর্থনীতিও বলা হয়। ব্লু- ইকোনোমি অর্জনে নতুন বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশের সমুদ্রে কী পরিমাণ মৎস্য সম্পদ, খনিজ সম্পদ, নৌ-চলাচলসহ অন্যান্য কী ধরণের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে দেশের ১৯টি মন্ত্রণালয়। এদিকে সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে ৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর মধ্যে সমুদ্র অর্থনীতির বিষয়ে নিজস্ব কর্ম পরিকল্পনা দ্রুত পাঠাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সমুদ্রসীমা এলাকায় সমন্বিত সার্ভে ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।

২০৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে ৯০০ কোটি। বিপুল এ জনসংখ্যার খাদ্য, পুষ্টি ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে মানুষকে অবশ্যই সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হতে হবে। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্র অর্থনীতি নানাভাবে অবদান রেখে চলেছে।

অস্ট্রেলিয়া সামুদ্রিক সম্পদ থেকে বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। ব্লু- ইকোনোমির মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, অন্যদিকে জিডিপি বৃদ্ধি করে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা যায়। এসব কারণে বাংলাদেশ সরকার ব্লু- ইকোনোমিকে সমৃদ্ধ করতে কাজ শুরু করেছে।

২০১৯ সালের মধ্যেই সমুদ্র অর্থনীতিতে বিপ্লব আনতে চায় সরকার। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে সমুদ্র অর্থনীতি ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে দেশ। সাগরের সম্পদ আহরণে একদিকে নেওয়া হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কর্মপন্থা, অন্যদিকে উপকূলীয় দেশগুলোর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে আগে থেকেই নেওয়া হয়েছে কার্যকরী পরিকল্পনা।

সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থায়ী একটি ব্লু-ইকোনোমি সেল গঠনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে অনুসন্ধান চালাতে জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নদীপথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহন বাড়াতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ পরিচালনা বাড়ানোর পাশাপাশি নদী বন্দরগুলোর আধুনিকায়নের ওপর সরকার গুরুত্ব দিয়েছে।

জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ ভাঙা শিল্পে সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রুজশিপ পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন সমুদ্রসীমায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সমুদ্র সম্পদ নির্ভর অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনা ও সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। সমুদ্র এলাকায় প্রধানত খনিজ সম্পদ রয়েছে। বালিতে একরকম, আবার পানির গভীরে আরেক রকম। পানির গভীরে গ্যাস সম্পদ আছে।

শুধু মাছই রয়েছে প্রায় ৫০০ প্রজাতির। এছাড়া রয়েছে শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া, অক্টোপাস, হাঙ্গরসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী। এগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থকরী ফসল হিসেবে চিহ্নিত। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির আকার প্রায় ৮৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সমুদ্র অর্থনীতির আকার ২৪ ট্রিলিয়ন ডলার।


২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ আসবে সমুদ্র অর্থনীতি থেকে। গভীর সমুদ্রের বিশাল অংশ বাংলাদেশের জলসীমায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রায় ৭৫টির মতো ছোট-বড় দ্বীপ রয়েছে। এগুলোতে পর্যটন সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিভিন্নখাতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।

সমুদ্র অর্থনীতিতে বিনিয়োগের নতুন দিগন্তে এখন বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরের অফুরান সম্পদ আহরণ সম্ভব হলে ১০ বছরের মাথায় বাংলাদেশের অর্থনীতি অভাবনীয় উচ্চতায় পৌঁছাবে।

⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top