হাজীগঞ্জে ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠিত

S M Ashraful Azom
হাজীগঞ্জে ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠিত
শেখ হাসিনা কাউকে নিরাশ করেন না- আলহাজ্জ্ব অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার
রকি চন্দ্র সাহা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেগা প্রকল্প ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান এর আওতায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু রয়েছে। ওই কর্মসূচির ৭টি পর্বের মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৬১০ জন প্রশিক্ষিত কর্মীকে(৫ম পর্ব) কর্মভাতা প্রদানের মাধ্যমে চাকুরী দেয়া হয়েছে। ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির উপজেলার সকল কর্মীকে নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদের অভিষেক বৃহস্পতিবার বিকেলে পিটিআই হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কাউকে নিরাশ করেন না। 

প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প পেয়ে আপনারা এখন পরিচয় দিতে পারেন একজন কর্মজীবী মানুষ হিসেবে। দেশের মানুষের আর্থিক উন্নতি হলে দেশ সমৃদ্ধ হবে। এজন্য আপনাদের মতো শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা যেনো বিপথে না যায় সেই ব্যবস্থাই ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি। আর এই কর্মসূচি যিনি চালু করেছেন তিনি যদি আগামী নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতায় আসেন তাহলে আপনাদের জন্য অবশ্যই সুসংবাদ।
National Service Ekota Parishad's inauguration took place in Hajiganj
হাজীগঞ্জে ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল সাভিসের কর্মীরা
প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে গাছ লাগায় সে কখনো গাছ কাটতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী যে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন এই প্রকল্প যেনো ওই গাছের মতোই দীর্ঘ স্থায়ী হয় আপনারাই ভোটের মাধ্যমে তার প্রমাণ দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই সেটি আশা করেন। প্রধানমন্ত্রী পরিবার-পরিজনদের হারিয়ে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকেই তিনি তার পরিবার মনে করেন। এমনকি তার পরিবারের কারোরই ব্যক্তিগত কোন চাহিদা নেই। তাই তিনি সর্বাবস্থায় দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির মাধ্যমে স্থায়ীকর্মসংস্থানে সামগ্রিকভাবে পুরো অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। অর্থনীতির ভাষায় বলা যায়- মানুষের যখন আয় বাড়বে তখন তাদের ভোগের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। চাহিদা পূরণ করার জন্য পন্যদ্রব্য ক্রয় করবে। তখনই সামগ্রিকভাবে পুরো দেশের অর্থনীতির পরিবর্তন হবে। যাহা ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের স্থায়ীকরণের মাধ্যমেই সম্ভব।


রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ নিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় ও অন্নের ব্যবস্থা করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। আশা করি আপনাদের বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্ব সহ বিবেচনা করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে দেশের সকল চেয়ারম্যানকে আপনাদের বিষয়টি অবগত করাবো। সকলের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরবো। আপনারা যেনো স্থায়ীভাবে চাকুরী করার সুযোগ পান।

হাজীগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ মমিনুল হক বকাউলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ জয়নাল আবেদীন, যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের উপজেলা ক্রেডিট এন্ড মার্কেটিং কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রহীম, ক্রেডিট সুপারভাইজার মালেকা পারভীন, কমিউনিটি সুপারভাইজার এমদাদ উল্যাহ, এমরান হোসেন, ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মোঃ মনজুরুল আলম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জহিরুল ইসলাম।

ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মোঃ মনজুর আলম পাটওয়ারী ও আলীগঞ্জ কেন্দ্র কমিটির সভাপতি কায়েম হোসাইন মজুমদারের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল সার্ভিস একতা পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল হোসাইন, সহ-সভাপতি শাকিল হায়দার চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শান্ত চক্রবর্তী, নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহ পরান চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মোঃ শাহ আলম(কবি), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তানভীর আহমেদ তালুকদার, দপ্তর সম্পাদক আবুল হাশেম প্রমুখ।

বক্তারা ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পটি মেয়াদ বৃদ্ধি অথবা স্থায়ীকরণের দাবী জানান। এর মাধ্যমে সারাদেশের প্রায় ৩ লক্ষ শিক্ষিত বেকারের বেকারত্ব দূর করে দেশের সমৃদ্ধি তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহযোগিতার সুযোগ চেয়েছেন কর্মীরা। বক্তারা আরও বলেন, ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলে তরুণদের মন জয় করেছেন। তরুণদের ভোটেই ওই সময় ক্ষমতায় আসেন। এটা সত্য যে বাংলাদেশ তথ্য ও প্রযুক্তিতে অনেক দ্রুত উন্নতি লাভ করে। এমনকি অন্যান্য উন্নয়নেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে যে মরণব্যাধী বেকারত্বের অভিশাপ থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এটিও যদি কেড়ে নেয়া হয় তাহলে আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না।


বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেকারত্বদের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি স্থায়ীকরণের জন্য একটি ঘোষণা চাই। যাহা তরুণ প্রজন্মের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসীন হবেন বলে বক্তাদের দাবী।

যতদিন পর্যন্ত স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হবে ততোদিন টেকসই উন্নয়ন তথা দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু স্থায়ী কর্মস্থানের দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির মাধ্যমে স্থায়ীকর্মসংস্থানে সামগ্রিকভাবে পুরো অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। 

এটি স্থায়ী না হলে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়বে বলে জানায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং বাধাগ্রস্ত হবে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মহা পরিকল্পনা।

⦽প্রকাশকাল: ১৭-সেপ্টেম্বর-২০১৮-০১:৩৩  ⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top