সেবা ডেস্ক: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নেত্রী ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার কার্যের নিমিত্তে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার পরিবর্তে খালেদা জিয়া যেখানে বন্দি, সেই নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ আদালত বসানো হয়।
আদালত বসার আগে এবং পরে এ নিয়ে সমালোচনায় মেতে ওঠেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। যা এখনো চলমান।
বিএনপি নেতারা বলতে থাকেন, খালেদা জিয়াকে বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসায় নেয়া উচিত ছিলো। কারাগারের ভেতরে কোর্ট আমরা মানি না। বিএনপির এমন অবস্থানের প্রেক্ষিতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপি কি আসলেই খালেদা জিয়ার ভালো চায়?
কারাগারের পুলিশ সুপার এবং একাধিক মিডিয়ার তথ্যের বরাত জানা যায়, পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে যেতেও খালেদা জিয়ার হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে হয়েছে। সেসময় ডান হাতটা অনেকটা বাঁকা করে হুইল চেয়ারের উপরে রাখেন খালেদা জিয়া।
বিচারকের সামনে একটি হুইল চেয়ারে তিনি বসে থাকেন। এসময় তাঁকে প্রচণ্ড অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তার হাত-পা এবং মাথা কাঁপছিল। বোঝাই যাচ্ছিল খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ।
ফলে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে, প্রচণ্ড অসুস্থ একজন মানুষকে বিএনপি নেতারা কেনো টেনে হিচড়ে বকশীবাজারের কোর্টে নিয়ে যেতে বলে? তারা কি আদৌ খালেদা জিয়ার ভালো চায়, নাকি শুধু ক্ষমতার কূটকৌশলে বয়স্ক মানুষটির শরীরের কথাও বিবেচনা করছে না তারা?
শুনানি চলাকালীন সময় খালেদা জিয়া বলেন, আমি অসুস্থ। আমি ঘন ঘন হাজিরা দিতে পারব না। তবে বকশি বাজারে না করে এখানে শুনানি করায় আমার ভালো হয়েছে। এই বয়সে এতো টানা-হেচড়া আর সহ্য হয় না।
কিন্তু খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বিবেচনায় না এনেই বিএনপির নেতারা বিষয়টিকে ক্যাঙ্গারু কোর্ট বলে আখ্যায়িত করছেন। অথচ তারা কি আদৌ জানে, ক্যাঙ্গারু কোর্ট কাকে বলে? ক্যাঙ্গারু কোর্ট বলতে বোঝায়, যে কোর্টের ফল কী হবে তা সর্বসাধারণের কাছে অজানা থাকবে।
কিন্তু খালেদা জিয়ার শুনানি চলাকালীন সেদিন আদালতে কী হয়েছে তা সকলেরই জানা। এমনকি খালেদা জিয়া সেদিন বেগুনী রঙের শাড়ি পড়ে ছিলেন তাও সকলের জানা। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, বিএনপির ক্যাঙ্গারু কোর্ট করা উক্তিও এখানে অগ্রহণযোগ্য।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ বিষয়ে বলেন, কারগারে আদালত স্থানান্তর করা প্রয়োজন ছিলো। নিরাপত্তাজনিত কারণের সঙ্গে খালেদা জিয়ার শরীরের কথা চিন্তা করেই পুরোনো কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা হয়েছে।
সব দিক বিবেচনা করে বলা যায়, খালেদা জিয়ার সার্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই তার স্বার্থেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষ বিশেষ আদালত হিসেবে বেছে নেয়া হয়।
এ নিয়ে যদি বিএনপির নেতারা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চান তবে নেহাতই তাদের ক্ষমতায় যাবার মূল উদ্দেশ্য জনগণের সামনে উন্মোচিত হয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।