মার্শা বার্নিকাটের আমন্ত্রণে চা চক্রে এসে সরকারের সমালোচনায় লিপ্ত

S M Ashraful Azom
মার্শা বার্নিকাটের আমন্ত্রণে চা চক্রে এসে সরকারের সমালোচনায় লিপ্ত
সেবা ডেস্ক: আমেরিকান রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট গত ১৩ আগস্ট সোমবার এক চা চক্রের আয়োজন করেন। অ্যামেরিকান ক্লাবের এই চা চক্রটিকে বলা হয়েছে বার্নিকাটের বিদায় উপলক্ষে সুশীলদের সঙ্গে বৈঠক। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই চা-চক্রে দাওয়াতি মেহমান হিসেবে যারা ছিলেন, তারা সবাই ওয়ান ইলেভেনের কুশীলব।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, আমেরিকান ক্লাবে বার্নিকাটের চা-চক্রে ছিলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন, সিপিডির ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। ওয়ান ইলেভেনের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এছাড়াও ছিলেন দেশের বাংলা ও ইংরেজি দুটি দৈনিকের দুজন আলোচিত সম্পাদক।

বার্নিকাটের বিদায়ী চা চক্র বলা হলেও, অতিথির তালিকা দেখে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের এক করার উদ্যোগ নিয়েছেন বার্নিকাট?

অবশ্য, গত কিছুদিন ধরেই মার্শা বার্নিকাটের তৎপরতা দেশের রাজনৈতিক সচেতন মহলে অনেক প্রশ্ন উদ্রেক করেছে। সম্প্রতি সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতে একটি চা-চক্রে মার্কিন দূতাবাসের প্রটোকল ভেঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন বার্নিকাট। আজকের চা-চক্রের অতিথিদের অনেকেই সেই চা-চক্রেরও অতিথি ছিলেন। আবার সম্প্রতি বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও নবগঠিত যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গেও দেখা গেছে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মকাণ্ড থেকে এটি স্পষ্ট যে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলব ও সুশীলদের ঐক্যবদ্ধের প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন বার্নিকাট। ওয়ান ইলেভেনের অবস্থা যদি আরেকবার ফিরে দেখা হয়, তাহলে বোঝা যাবে ওই সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান চেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেনা সহায়তায় এর প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চলে। এখন আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

সম্প্রতি একটি বিষয় হয়তো অনেকেই খেয়াল করেছেন, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুজন ও ড. কামাল হোসেন সবাই অভিন্ন ভাষায় কথা বলছেন। সবাই প্রায় একই ভাষায় সমালোচনা করছেন সরকারের।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পন্থা হলো নির্বাচন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সুশীলদের নিয়ে কাজ করছে তাঁরা জনবিচ্ছিন্ন এবং নির্বাচনে মূল্যহীন বলেই স্বীকৃত। এমন সুশীলদের নিয়ে তৃতীয় শক্তির খোয়াব শুধু খোয়াবই। নির্বাচনের মাঠে এই সুশীলদের জয়ী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা বা আশঙ্কা নেই। তাই সুশীলদের নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৃতীয় শক্তির প্রচেষ্টা বৃথা বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। এই বিষয়টি নিশ্চয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও অজানা নয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের ধারক দাবিদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুশীলদের নিয়ে তৃতীয় শক্তির উত্থানের পরিকল্পনা তবে কি ভিন্ন কোনো পথে?

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বার্নিকাটের সাম্প্রতিক চা-চক্রসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডসহ উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। এই জল্পনা-কল্পনা শেষ পর্যন্ত কোনো পথে বাস্তবে মোড় নেবে তা কয়েক মাসের মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।
 -

ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top