সেবা ডেস্ক: ছাত্রদল কর্তৃক একইদিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৪টি কার্যালয়ে তালা ঝোলানো এবং ভাঙচুরের ঘটনা বেশ পুরনো। এর প্রধান কারণ ছিলো তৃণমূল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ-বিপক্ষে বিভক্তি।
সম্প্রতি আবারও সম্মুখে আসতে শুরু করেছে পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল, ভোলাসহ একের পর এক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছাত্রদল-যুবদলের কর্মীরাই কার্যালয়ে তাল ঝোলাচ্ছেন। ভাঙছেন স্থানীয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিভিন্ন অফিস। এমন বাস্তবতায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রদল-যুবদলের এমন আচরণের ফলশ্রুতিতে এই সত্য প্রকাশ পাচ্ছে যে, বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্ব শুধু কেন্দ্রে নয়, প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে তৃণমূলেও।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন বরগুনায় যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অফিস ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেয় পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। একইদিনে ভোলায় কেন্দ্র থেকে জেলা যুবদল কমিটি ঘোষণার পর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও গণপদত্যাগের আলটিমেটাম দেয় যুবদল ও জেলা বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
পরে তারা জেলা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অফিস ও জেলা যুবদল অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং ভঙচুর করে। ২১ আগস্ট বরিশাল ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা নিয়ে জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা কেন্দ্রীয় সভাপতি ছবি সংবলিত পোস্টার টানিয়ে তাতে ঝাড়ু পেটা ও ঝাড়ু মিছিল করেন। পরে কার্যালয় ভাঙচুর করে।
সম্প্রতি একই ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বিএনপিতেও। ২৬ আগস্ট ছাত্রদলের ৬টি থানা ও ৩টি কলেজের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরে ২৭ আগস্ট তারা কার্যালয় ভঙচুর করে।
একে একে রাজশাহী জেলার প্রতিটি কার্যালয় ভাঙচুরের হুশিয়ারি দেয় তারা। এরপর এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে বগুড়া বিএনপিতে। ২৮ আগস্ট বগুড়ার কাহালু উপজেলা বিএনপি অফিসে তালা দিয়েছে বিক্ষুব্ধ যুবদল নেতাকর্মীরা।
তৃণমূলের এমন একাধিক ঘটনার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কর্মীদের অভিযোগ- দলের সিনিয়র নেতারা টাকার বিনিময়ে কমিটি ঘোষণা করছেন পদ দিচ্ছেন। আর কমিটিতে রাখা হচ্ছে না দলের ত্যাগী নেতাদের।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোভাবাপন্ন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির জরাজীর্ণ অবস্থা তৈরি হয়েছে এটা অস্বীকার করার কিছু নাই। এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি নিজেদের সামলাতে ব্যস্ত।
এই সুযোগে আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের সিনিয়র নেতারা। আর তা করতে গিয়ে ত্যাগীদের বঞ্চিত করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব বিষয়ে ঠিক সময়ে নজর না দিতে পারলে রাজনীতিতে বিএনপি ভবিষ্যত অন্ধকার।