আসছে ডিসেম্বরে পর্দা উন্মোচিত হচ্ছে বাংলাদেশের তিনটি সেতুর

S M Ashraful Azom
আসছে ডিসেম্বরে পর্দা উন্মোচিত হচ্ছে বাংলাদেশের তিনটি সেতুর

সেবা ডেস্ক: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। প্রতিদিন পণ্যবাহী যানবাহনসহ যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয় এই মহাসড়ক উপর দিয়ে।

যার কারনে প্রায়ই যাত্রীদের ও পণ্যবাহী যানবাহনের দীর্ঘক্ষণ অসহনীয় যানজটে বসে থাকতে হতো। এজন্য সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটিতে চার লেনে উন্নীত করে যাতে একসাথে বেশি যানবাহন চলাচল করতে পারে এবং যানজট সমস্যার সৃষ্টি না হয়।

জনগনের যাতায়াত আরো দ্রুত ও পণ্যবাহী যানবাহন যাতে কম সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থানে পৌঁছাতে পারে এজন্য ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সেতু হচ্ছে- শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা এবং দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে এই তিন সেতু অন্তর্ভুক্ত। প্রধানমন্ত্রী নিজে এই সেতু নির্মাণের অগ্রগতির খোঁজ খবর রাখছেন। তাঁরই নির্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছুটে যান সরেজমিনে কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে।

এই সেতু উদ্বোধনের মেয়াদ কাল ২০১৯ সালের জুন মাসে হলেও দ্রুত নির্মাণ কাজের অগ্রগতির জন্য এবছরের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা সম্ভব। দ্রুত কাজ চলায় এই তিন সেতু নির্মাণে ব্যয় কমবে অন্তত ৭শ’ কোটি টাকা। এই তিনটি সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪শ’ ৮৬ কোটি ৯৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

চার লেনের সড়ক পার হয়ে যানবাহনকে সেতুর উপরে এক লেনে চলাচল করতে হয়। নতুন তিনটি সেতু নির্মাণের ফলে এই সময় অনেক কমে আসবে এবং তিনটি সেতু উদ্বোধনের পর পুরোনো তিনটির সংস্কার করা হবে।

চার লেনবিশিষ্ট দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে বিদ্যমান সেতুর ভাটিতে। ৩৯৭ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর সংযোগ সড়ক হবে আট লেনবিশিষ্ট।

আর বিদ্যমান সেতু ও নতুন সেতু মিলিয়ে লেনও হবে আটটি। চারলেনবিশিষ্ট দ্বিতীয় মেঘনা সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে বিদ্যমান সেতুর উজানে। ৯৩০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটির উভয় পাশে থাকবে ছয় লেনবিশিষ্ট সংযোগ সড়ক। আর বিদ্যমান ও নতুন সেতু মিলিয়ে সেতু হবে ছয় লেনের।

দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে বিদ্যমান সেতুর ভাটিতে। এ সেতুটিও হবে চার লেনের। আর পুরনোও নতুন সেতু মিলিয়ে হবে ছয় লেন।

দেশের তিনটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার (জাইকা) আর্থিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে। জাইকার অর্থ সেতুগুলোর নির্মাণ, পুনর্বাসন ও পরামর্শ সংক্রান্ত কাজে ব্যয় হবে।

ভ্যাট, ট্যাক্সসহ প্রশাসনিক ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ হবে সরকারি তহবিল থেকে। সেতু তিনটি যৌথভাবে নির্মাণ করছে জাপানি প্রতিষ্ঠান ওবায়শি করপোরেশন, সিমিজু করপোরেশন এবং জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত গতিতে কাজ করার ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতু নির্মাণ শেষ হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

পাঁচটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সরকার এই ‘কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতি দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।

এগুলো হলো- ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে ক্রমবর্ধমান যানবাহনের সংকুলান করা, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করা, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাধন করা, প্রকল্প এলাকায় আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড উন্নত করা এবং সকলের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

সেতু তিনটি নির্মাণের ফলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। বিশেষ করে ঢাকা -চট্টগ্রামগামী যানবাহন আগের থেকে অনেক কম সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

বর্তমানে তিন সেতুতে তিন ঘন্টা সময় বেশি লাগে। সেই সময় কমে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া যাবে। বর্তমান সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ম্যান উন্নয়ন করা।

লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার এবং এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী সকলে।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top