সেবা ডেস্ক: সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও জামায়াত ইসলামের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও টানাপোড়েনের মধ্যে জামায়াত-বিএনপিকে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে পাকিস্তান। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, জামায়াত-বিএনপির কোন্দল নিয়ে তারেক রহমান পাকিস্তানের দ্বারস্থ হলে এ বিষয়ে জামায়াত ও বিএনপিকে পৃথক পৃথক বার্তা দিয়েছে পাকিস্তান।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থিতা দেয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি-জামায়াত। প্রতিটি সিটি করপোরেশনেই জামায়াত আলাদা প্রার্থী ঘোষণা করে। প্রাথমিকভাবে বিএনপির সিনিয়র নেতারা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের প্রার্থী প্রত্যাহারে অনুরোধ করলে তা প্রত্যাখান করে। এমনকি স্বয়ং তারেক রহমানের অনুরোধেও নিজেদের অবস্থানে অটুট থাকে জামায়াত। পরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর বরিশাল থেকে প্রার্থী প্রত্যাহারের পর পরবর্তীতে রাজশাহীতে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে কাজ না করার ঘোষণা দেয় দলটি। এদিকে সিলেটে প্রার্থী প্রত্যাহার না করে বিএনপির বিপক্ষে নির্বাচন করছেন জামায়াতের প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম।
এমন বাস্তবতায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি পাকিস্তানের গোচরে গেলে তা নিয়ে আপাতত কোনো বিশেষ সমাধান না দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছে দুই দলকেই। তবে পাকিস্তান জামায়াতের পক্ষের অভিযোগ বিএনপির অভিযোগের তুলনায় বেশি আমলে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র বলছে, হঠাৎ করে শরিক দল জামায়াতের প্রতি বিএনপির বিরূপ আচরণকে ভালো চোখে দেখছে না পাকিস্তান। দেশটি বিএনপিকেই দোষারোপ করছে। কেননা, নির্বাচনসহ পূর্ববর্তী বিভিন্ন ইস্যুতে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির চতুরতার বিষয়ে অবগত আছে দেশটি।
এ বিষয়ে জামায়াতের একজন আমীর বলেন, জামায়াতে ইসলামী চলে পাকিস্তানের অভিন্ন নীতি মেনে। আর বিএনপি চলে কেবল পাকিস্তানের ছায়া অনুসরণ করে। সুতরাং অভিযোগ যখন পাকিস্তান পর্যন্ত পৌঁছেছে তখন আমরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, বিএনপির যথেচ্ছাচারিতা এবার সুদে-আসলে ফেরত দিতে পারব। পাকিস্তানের অনুদানে দল চালিয়ে পাকিস্তান পুষ্ট জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চতুরতার জবাব দেয়া হবে। অপেক্ষা শুধু পাকিস্তানের নির্বাচন পর্যন্ত। তবে দেশটির কাছে অতি-সত্তর সমাধান আশা করছি আমরা। বিষয়টি নিয়ে যখন-তখন সিদ্ধান্ত আসবে বলেই আশা করছি।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বিশেষ বার্তা প্রাপ্তি সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা নিশ্চিত করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। ফলে পাকিস্তানের বিশেষ বার্তা নিয়ে বিএনপির নিশ্চুপ অবস্থানকে বিশ্লেষকরা সহজ চোখে দেখছেন না। তারা বলছেন, এ যাত্রায় ফেঁসে যেতে পারে বিএনপি।