সেবা ডেস্ক: ২০১৩ সালের সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের কাছে পরাজিত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ শওকত হোসেন হিরণ। প্রাক্তন মেয়র থাকাকালে হিরণ বরিশালের উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে বরিশাল নগরিকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন নগরে রূপান্তর করেছিলেন।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগর নির্মাণসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তিনি। তারপরও নির্বাচনে হেরে যান তিনি। যার কারন অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে যে, নির্বাচনের পূর্বে ‘হেফাজত ইস্যু’ সৃষ্টি করার কারণে জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। ফলে বিএনপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান তিনি।
গত ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী মেয়র হিসেবে থাকায় বরিশাল নগরীতে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি বলে দাবি বরিশাল বাসীর। তারা দাবি করেন, নির্বাচনের পূর্বে আহসান হাবিব কামাল যেসব প্রতিশ্রুতি করেছিলেন তার ৩০ ভাগও বাস্তবায়ন করতে পারেননি। এর প্রধান কারণ হিসেবে সচেতন নাগরিকদের মত, সরকারদলীয় প্রার্থী না হবার কারণে মেয়র হয়েও উন্নয়নের রেশ রেখে যেতে পারেননি কামাল। অথচ বিগত পাঁচ বছরে তার স্থানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে বরিশালের রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা সমস্যাসহ অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি পেতো তারা।
বরিশালবাসীর ধারণা নগরপিতা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী না হলে, সরকারের সাথে সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়হীনতা কাজ করে। কামাল বিরোধী দলের সমর্থক বলে আত্মসম্মান, অভিমান ও অহংকারের কারণে অনেক সময় উন্নয়ন কাজের দাবি নিয়ে সরকার দলীয় ব্যক্তিদের সাথে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে না পারায় বরিশাল বাসী বঞ্চিত হয় প্রাপ্য উন্নয়নের অংশীদার হতে।
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বরিশালের নাগরিকরা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, সরকার দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হলে কয়েক গুণ উন্নয়ন সম্ভব হত। এর পেছনে কিছু কারণও তারা চিহ্নিত করেছে। মূলত সরকার দলের সমর্থন থাকলে কোনো উন্নয়ন কাজের বাজেট পেশ হতে বিলম্ব হয়না, উন্নয়ন বাজেটও আগের থেকে আরো বাড়ে।
নগরীর বিভিন্ন শ্রেণী পেশা ও বয়সের ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকার দলীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত না করে যে ভুল তারা করেছিল, তেমন ভুল আর করতে চায় না তারা। তাদের মতে, বিএনপি প্রার্থীকে ভোট দিয়ে তারা খেসারত স্বরূপ একটি অনুন্নত, অপরিষ্কার ও অপরিকল্পিত নগরী পেয়েছে। এর মাসুল হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চান তারা।