রাজনীতি ভুলে গিয়ে বিদেশ যাওয়ায় ব্যস্ত বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা

S M Ashraful Azom
রাজনীতি ভুলে গিয়ে বিদেশ যাওয়ায় ব্যস্ত বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা

সেবা নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির দায়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে ব্যর্থতা, তারেক রহমানের অযোগ্য নেতৃত্ব, সিনিয়র নেতাদের সাথে তৃণমূল বিএনপি নেতাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, পর পর দুটি সিটি করপোরেশনে দলের প্রার্থীদের করুণ পরাজয়ে হতাশ ও দিকভ্রান্ত হয়ে নির্জীব হয়ে পড়েছে তৃণমূল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

মূলত আন্দালনের নামে তৃণমূল নেতৃত্বকে নাশকতায় ব্যবহার করে পরবর্তীতে অবহেলা করা, বিভিন্ন কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে হাইব্রিড নেতাদের পদ দেওয়াসহ একাধিক অনিয়মের কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে তৃণমূল বিএনপি। এছাড়া মাঠের রাজনীতিকে বেডরুম রাজনীতিতে পরিণত করা, রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করানোয় মনের দুঃখে রাজনীতি ছেড়ে নিজ নিজ ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি এবং শ্রমিক ভিসায় বিদেশ যাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন তৃণমূল বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

বিএনপি’র বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, গত নয় বছরে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল সারা দেশের তৃণমূল বিএনপি। সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সমন্বয়হীনতায় সঠিক নির্দেশনা পাননি তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। রাজনীতির নামে, সরকার পতন আন্দোলনের নামে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। বিনিময়ে পাওয়ার খাতাটা শূন্য। নেতা-কর্মীদের জেল-জরিমানা ও দুর্দিনে পাশে ছিলেন না কেন্দ্রীয় কোন নেতারা। দলের প্রয়োজনে সময় দিয়ে বেকার হয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসনে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিএনপি। তাই সব মিলিয়ে দলের প্রতি অসন্তোষ ও ক্ষোভ থেকে মাঠের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। রাজনীতি বাদ দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি এমনকি বিদেশ যাওয়াকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তৃণমূল বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

এই বিষয়ে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ভিসায় কর্মরত লক্ষীপুর জেলা বিএনপির এক কর্মী আব্দুস সাত্তার হতাশা নিয়ে ২৮ জুন ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লেখেন, দলের জন্য কি করি নি? বিনিময়ে পেয়েছি শুধু মুলা। নেতা-কর্মীরা গত দশ বছরে শুধু মার খেয়েছে আর বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দিয়েছে। চাঁদার টাকায় লন্ডনে রাজার হালে থাকেন তারেক রহমান। আর আমরা দিশেহারা হয়ে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছি। বিএনপির রাজনীতি করে কোন লাভ নেই। দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। যারা দেশের উন্নতি করবে তাদেরকেই দেশের জনগণ ভোট দিবে। মানুষ এখন সুস্থ্য রাজনীতি ও উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। যারা উন্নয়ন করবে, তারাই দেশ চালানোর দায়িত্ব পাবে।

রাজধানীর কমলাপুর এলাকায় ফলের দোকানী মনিরুল ইসলামও প্রকাশ করেন হতাশার কথা। তিনি বলেন, বিএনপির কথা বলে লাভ নেই। বিএনপি শুধু নিতে জানে। প্রতিদান দিতে জানে না। একটা দল এতটা স্বার্থপর হয়ে চলতে পারে না। দেশের মানুষ এখন সচেতন। দলের জন্য সব করে এখন রাস্তার ধারে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে আমাকে। আমার মত অনেক নেতা-কর্মী দল করে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। রাজনীতি মানুষের উন্নয়নের জন্য, ক্ষতির জন্য নয়। আগামী জাতীয় নির্বাচনে মানুষ সুস্থ্য রাজনীতির ধারকদের ভোট দিবে। মানুষ পেট্রোল বোমা ও মানুষে পোড়ানোর বিপক্ষে এবং উন্নয়নের স্বপক্ষে ভোট দিবে।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top