নগরবাসীর দোরগোড়ায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১৮। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণাও একেবারে শেষ পর্যায়ে। গত ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ব্যাপক প্রচারণায় নেমেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পরপরই যুগোপযোগী ১৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে প্রচারণায় নেমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন লিটন। সেই তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছেন এবারের নির্বাচনে লিটনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
নির্বাচনী প্রচারণার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে অনেকটা তড়িঘড়ি করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন বুলবুল। যদিও অনেকের মতে নির্বাচনী ইশতেহারের নামে আসলে আন্দোলনের ইশতেহার প্রকাশ করেছেন বুলবুল। কারণ তার নির্বাচনী ইশতেহারের বেশিরভাগ জুড়েই রয়েছে নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন ধরণের দলীয় আন্দোলনের পরিকল্পনা। ফলে বুলবুলের ইশতেহার নিয়ে অনেকটাই হতাশ নগরবাসী।
বুলবুল তার ইশতেহারে বলেছেন নির্বাচিত হলে রাজশাহী মহানগরে আবাসিকে বন্ধ থাকা গ্যাস সংযোগ আবারো চালু করতে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অথচ আবাসিক এলাকায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয়েছিল বুলবুল মেয়র থাকা অবস্থাতেই। তাছাড়া রাজশাহীতে গ্যাস সংযোগ নিয়ে এসেছিলেন সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। লিটন রাজশাহীর মেয়র থাকা অবস্থায় তার একান্তই ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে রাজশাহীর জন্য গ্যাস নিয়ে এসেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে বুলবুল ক্ষমতায় এসে সরকারকে হেয় করতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলো বুলবুল।
এছাড়া বুলবুল তার নির্বাচনী ইশতেহারের আরেক জায়গায় নগরবাসীর উপর থেকে হোল্ডিংট্যাক্স বা কর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অথচ বুলবুল সর্বশেষ মেয়াদে মেয়র হিসাবে ক্ষমতায় এসে নিজেই নগরবাসীর উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলেন।
লিটনের সময় গৃহঋণ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও বুলবুল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর হোল্ডিংট্যাক্স ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়। বুলবুল মেয়র পদে থাকা অবস্থায়, রাজশাহীবাসী মানববন্ধন সহ ব্যাপক আন্দোলন কর্মসূচি করলেও গৃহঋণ কমাতে পারেনি। জনসমর্থন আদায় করতে তিনি এইবারের ইশতেহারে হোল্ডিংট্যাক্স কমানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন বলে মনে করছেন অধিকাংশ নগরবাসী। বুলবুল স্ববিরোধী ইশতেহার ঘোষণা করে এবারের নির্বাচনে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন।