সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারে বাধা দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে খোদ নিজ দলেই। জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমানের ব্যক্তিগত কারণেই জামায়াতের মেয়র প্রার্থীকে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াঁতে দেননি।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, শফিকুর রহমান ২০-দলীয় জোটের মনোনয়ন নিয়ে সিলেট সদর আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে আগ্রহী। তার আগে সিটি নির্বাচনে দলীয় অবস্থান জানান দিয়ে বিএনপিকে একটা বার্তা দিতে চান। তাই সিলেটে জামায়াতের মেয়র প্রার্থী দিতে তার আগ্রহ ছিল বেশি।
এ ছাড়া শফিকুরের সঙ্গে আরিফুল হকের দূরত্ব রয়েছে। শফিকুর রহমানের বাড়ি সিলেটের মৌলভীবাজারে। সিলেট শহরে তার ব্যবসা আছে।
১৫ জুলাই জোটের বৈঠক থেকে বিএনপিসহ অন্য শরিক দলগুলো জামায়াতের প্রতিনিধিকে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ জানায়। যদিও জামায়াত এখন পর্যন্ত সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি। প্রার্থী প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনাও নেই বলে জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানিয়েছেন। এ ছাড়া আরিফুলের সঙ্গে সিলেটের জামায়াত নেতাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো নয়। তাই সিলেটে কোন ছাড় দিতে চায় না জামায়াত।
বিএনপি, জামায়াতসহ জোটের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনটি লক্ষ্য নিয়ে জামায়াত সিলেটে মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে প্রধান লক্ষ্য বিএনপিকে নিজেদের গুরুত্ব বোঝানো এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্র তৈরি করা।
জানা গেছে, জামায়াত নেতা শফিকুর রহমান ২০০১ সালের নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া-কমলগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হয়ে জামানত হারান তিনি। ওই সময় শফিকুর রহমান জামায়াতের সিলেট মহানগরীর আমির ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানান, সিলেটে জামায়াত মেয়র নির্বাচন করতে চায়, এমন তথ্য তারা আগেই জানিয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, সব সিটিতে তারা বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে। সিলেটে যেন তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার জামায়াতের সেক্রেটারি সিলেট-১ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করতে চান, এমন কথাও বিএনপির নেতাদের কানে এসেছে।
বিএনপিকে আগামী নিবার্চনে নিজের অবস্থান জানান দিতেই জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুর রহমান এ কৌশল হাতে নিয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।