রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ৩০জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে । টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে রাজশাহীর সর্বত্র। আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা মাত্র। এরপরই রাজশাহীবাসী তাদের ভোটের মাধ্যমে পেয়ে যাবে রাজশাহীর পরবর্তী নগরপিতা। মেয়র প্রার্থীরা এখন করছে তাদের শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণা। রাজশাহীতে মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। জুলাইয়ের ১০ তারিখে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। ১০ তারিখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ইশতেহার ঘোষণা করেন। ঐ দিন থেকেই এই দুই প্রার্থী মাঠ গরম করে রাখেন। বাকি তিন জন মেয়র প্রার্থী পরে ইশতেহার ঘোষণা করার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে নামেন।
যে কোনো নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ১০ তারিখ থেকে গণসংযোগ করেন নির্বাচনী ইশতেহার ছাড়া। নির্বাচনী ইশতেহার ছাড়া নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা অনেকটা মাঝিবিহীন নৌকার মতো। ইশতেহারের মাধ্যমে ভোটারগণ জানতে পারে তাদের প্রার্থী তাদের কি কি উন্নয়নমূলক কাজ, নাগরিক সেবা প্রদান, নগরীর সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে তাদের পাশে থাকবে। কিন্তু বুলবুলের ক্ষেত্রে তা হয়েছে ভিন্ন। বুলবুল ইশতেহার ঘোষণা করেন নির্বাচনের মাত্র ৬দিন আগে। এর আগে বুলবুল গণসংযোগ করেন অনেকটা উদেশ্যহীন ভাবে। যদিও কর্মীসমর্থক কম ছিল বুলবুলের। কারণ মাদক বিরোধী অভিযানের কারণে বিএনপির বেশির ভাগ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কারাগারে।
নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা না করে বুলবুল অনেকটা লোক দেখানো প্রচারণা চালায়। অবশেষে ঘোষণা করে ১৮ দফার এক নির্বাচনী প্রচারণা। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন জনসমর্থন অর্জনে। তার ইশতেহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তাতে উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতি কম ছিল। এর ভিতর ৭টিই ছিল আগের ইশতেহার অর্থাৎ গত মেয়াদের। যা কিনা তিনি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থ হওয়াটাই তার জন্য স্বাভাবিক। কারণ তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বেশির ভাগ সময় পার করেছেন কারাগারে। লিপ্ত ছিলেন নানান অপকর্মে। ২০০৮ এর মেয়র লিটনের সাজানো শহরে তিনি আসার পর অনেকটা ময়লা আবর্জনার নগরীতে পরিণত হয়। নগরীর প্রাণ দুই নদী পদ্মা ও বারনই নদীর পানি দূষিত হতে শুরু করে। কিন্তু সেদিকে নজর ছিলো না বুলবুলের। তিনি নগররীর অভিভাবক থাকাকালীন অসহনীয় পর্যায়ে হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়ে যায়। এই হোল্ডিং ট্যাক্স কমানোর জন্য তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
বুলবুলের ইশতেহারের তিনটি ছিল আন্দোলনমুখী। নগরবাসী শান্তিতে একতাবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে চায়। তারা চায় আন্দোলন বিহীন একটি নগরী, নাগরিক সুযোগ সুবিধাযুক্ত একটি নগরী। জনসমর্থন না পেয়ে বিএনপির মেয়র মনে করেছিলেন শেষ পর্যায়ে ইশতেহার ঘোষণা করে তিনি জনসমর্থন আশানুরূপ ভাবে ফিরে পাবেন। কিন্তু নগরবাসী চায় উন্নয়ন। স্বাস্থ্যসম্মত, বাসযোগ্য একটি নগরী। ১৮ দফা ইশতেহারের মধ্যে ৭টি পুরাতন ও ৩টি আন্দোলনমূলক। এই ইশতেহারে নগরবাসী আশাহত। কম কর্মীসমর্থক ও জনসমর্থনের পর নির্বাচনের শেষ ভাগে একটি ব্যর্থ ইশতেহার ঘোষণা করলেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ও সদ্য বিদায় নেয়া সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ।