বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি চালু হয়েছে। ২৫ জুলাই, বুধবার বেলা ১১টার দিকে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইভ-জি সেবার পরীক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বিটিআরসির সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, রবির এমডি ও সিইও মাহতাব উদ্দিন, হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও ঝ্যাং জেনজুন।
ফাইভ-জি পঞ্চম প্রজন্মের তারহীন নেটওয়ার্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল অপারেটর এটিঅ্যান্ডটি জানিয়েছে, ২০১৮ সাল নাগাদ ফাইভ-জি’র সংজ্ঞা তৈরি হতে পারে। ২০১৯ সালে আইটিইউ ফাইভ-জি’র মান নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে। কোন প্রযুক্তিকে ফাইভ-জি বলা যাবে বা কোন বৈশিষ্ট্য থাকলে তাকে ফাইভ-জি বলা যাবে বা এর গতি কেমন হবে—তা ঠিক হবে ওই সময়েই। তবে ধারণা করা যায়, ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক হবে শক্তি সাশ্রয়ী, দ্রুতগতির এবং আরও বেশি স্মার্ট। পঞ্চম প্রজন্মের এই মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর আগে নতুন নতুন তারহীন প্রযুক্তিপণ্য বাজারে পাওয়া যাবে। দ্রুতগতির স্মার্টফোন, স্মার্ট বাড়ি, গাড়ি এবং ডিভাইসে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে বলে জানা গেছে।
ফেইসবুক পেজে সজীব ওয়াজেদ লিখেন, “এই মুহূর্তে আমি ট্রাফিকে আটকে আছি কিন্তু ঢাকাতে বসেই ঠিক আমেরিকার মতোই ৪জি ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছি। আমরা কয়েকমাস আগে ৪জি সেবা চালু করলেও ইতোমধ্যেই কাভারেজ বেশ ভালো বলে মনে হচ্ছে। এর জন্য টেলিকম কোম্পানিগুলোকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আওয়ামী লীগ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরেকটি মাইলফলক অর্জন।”
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশ ফাইভ-জি’তে প্রবেশ করবে। এজন্য আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) পরামর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সর্বাধুনিক ৪জি এলটিই প্রযুক্তিকে ছাপিয়ে যেতে হবে ৫জিকে। তাঁরা বলছেন, ৫জির অর্থ যাই দাঁড়াক না কেনো ২০২০ সালের মধ্যেই ৫জি প্রযুক্তির উন্নয়ন সম্পন্ন করে ফেলতে হবে।
এখন পর্যন্ত ৫ জির প্রোটোটাইপ নিয়ে চীন যে পরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে ৩ দশমিক ৫ জিবিপিএস পর্যন্ত গতি পাওয়া গেছে। এর আগে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে দেশে থ্রিজি’র ব্যবহার শুরু হয়। নতুন নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণাতে হুয়াওয়ে ৬ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। হুয়াওয়ের পাশাপাশি টিম, টেলুস ও অন্যান্য নেটওয়ার্ক সেবাদাতারাও ফাইভজি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর থেকেই কোয়ালকম, স্যামসাং ও ইন্টেল ৫জি নেটওয়ার্ক ব্যবহারের উপযোগী ফোন নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্মের এই ওয়্যারলেস প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে অনেকখানিই পাল্টে দেবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, আওয়ামী লীগ সরকার সময়ের চেয়ে অনেক দূরে চিন্তা করে বলেই ৪জি চালু হওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ৫জি সেবা নিয়ে আসছে।
সরকারের অব্যাহত জয়যাত্রার অংশীদার হয়ে জনসাধারণ চায় নতুন নতুন সম্ভাবনার সাক্ষী হতে। আর তাই সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ জনতা ও সর্বমহল।