সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নেতা-কর্মীদের অগ্রাহ্য ও অবহেলা, বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা আদায় ও নিজ কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে বিচারের নামে টাকা খাওয়ার অভিযোগে নিজ দলের কর্মীরাই অারিফুল ইসলামকে ভোট দিবেন না বলে সূত্রের খবরে জানা গেছে। এছাড়া ঈদ-পরবে লন্ডন থেকে আসা বরাদ্ধের টাকাতেও ভাগ বসানোর অভিযোগে অন্তত গরীব-দুঃখী নেতারা আরিফুল হককে ভোট দিবেন না বলে মৌখিক প্রচারণা শুরু করেছেন।
সূত্রের খবরে জানা গেছে, আরিফুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। বিগত মেয়াদকালে নেতা-কর্মীদের কাছে অধরাই ছিলেন মেয়র আরিফুল হক। কাজের সময় খোঁজ মিলত না আরিফুলের। অফিসের কাজের বাহানা দিয়ে রাজধানীতে বসে রাজনীতি করতেন তিনি। এদিকে দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষরা নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হতেন। সিলেটে থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে নেতা-কর্মীদের এড়িয়ে চলতেন আরিফুল। দলের প্রয়োজনে গা ঢাকা দিয়ে দিনের পর দিন ছুটি কাটাতেন তিনি। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তিনি গরীব-মেহনতি মানুষদের দেখতে পারতেন না।
আরিফুলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ছিল যে নিজ দলের কর্মীদের মাঝে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে বিচারের নামে টাকা আদায় করতেন। ন্যায্য বিচারের জন্য দিনের পর দিন নেতারা তার দ্বারে ঘুরেও সমাধান পাননি। এছাড়া সিটি করপোরেশনে চাকরি দেওয়া, চাকরিতে পদোন্নতি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, লন্ডনের ভিসা ম্যানেজ করে দেওয়া, টেন্ডারের কাজ পাইয়ে দেওয়া জন্য কমিশন খাওয়া, হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া, পানির বিল কমিয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ গ্রহণের মত একাধিক অভিযোগ রয়েছে আরিফুলের বিরুদ্ধে।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেটের জালালাবাদ এলাকার বিএনপির এক নেতা বলেন, কয়েক মাস পূর্বে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতার সাথে আমার ঝামেলা হয়। বিষয়টির সমাধানের জন্য আমরা উভয়ে মেয়র আরিফুল হকের শরণাপন্ন হলে তিনি বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য উভয়ের কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করেন। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল, তিনি আমাদের টাকা খেয়েও বিষয়টির কোন সমাধান করেননি। শুনেছি আমার বিরোধী পক্ষকে আদালতে মামলা করারও পরামর্শ দেন আরিফুল।
পরবর্তীতে আমরা দুজন মিলে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন কামরানের কাছে গেলে তিনি বিষয়টির ন্যায্য সমাধান করে দেন। আরিফুল আসলে মানুষের পর্যায়ে পড়েন না। নেতৃত্ব দেওয়ার কোন গুণ নেই তার। তার তুলনায় আওয়ামী লীগ প্রাথী কামরান সাহেব সৎ, যোগ্য ও গণমানুষের নেতা। কামরান সাহেব গরীব মানুষের দুঃখ উপলব্ধি করতে পারেন। কামরান সাহেবকে এবার বিএনপি-জামায়াতের নেতারাও ভোট দিবেন। সিলেটের উন্নয়ন ও বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে কামরান সাহেবকে বিজয়ী করবে সিলেটবাসী।
রাজনীতি করতে হয় মানুষের কল্যাণের জন্য। আরিফুল হক ধ্বংস ও দুর্নীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আরিফুল হক বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হবেন, শুধু তার অনৈতিকতা ও দুর্নীতির কারণে। আবার শুনেছি তিনি লন্ডনে দশ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে বিএনপির মনোনয়ন নিয়েছেন। যে ঘুষ দিয়ে নির্বাচনে মনোনয়ন গ্রহণ করে, সে কিভাবে জনগণের সেবা করবে? আমরা, বিএনপি-জামায়াত কর্মীরাই এবার আরিফুল হককে প্রত্যাখ্যান করব।