মিঠু আহমেদ, জামালপুর: জামালপুর সিংহজানি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করার সময় চালের আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় মেসার্স জে এস এল রাইস মিলের ১৯ মেট্রিক টন চাল বোঝাই একটি ট্রাক ফেরত পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মাজহারুল ইসলাম এ অভিযান চালান।
সিংহজানী খাদ্য গুদাম সুত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মওসুমের চাল সংগ্রহ অভিযানের শুরু থেকেই সিংহজানি খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও পরিচালনা কর্মকর্তা জিনাত শামছুন্নাহার সুলতানার নেতৃত্বে খাদ্যবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে খারাপ চাল সংগ্র করে আসছিল। আছাড়াও কাবিটা, বিজিএফের, টিআর এর চাউলের বস্তায় তারা ৫০ কেজির পরিবর্তে ৪৬ থেকে ৪৭ কেজি চাল দিচ্ছে। এতে করে বিপাকে পরড়ছেন জেলার স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। তাও আবার এই চাল নিতে শামছুন্নাহার সুলতানা সুলতানাকে দিচ্ছে হচ্ছে মোটা অংকের উৎকোচ যা চেয়ারম্যানরা সবসময়ই বলে বেড়ান। এরই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের জে এস এল রাইস মিল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে শামছুন্নাহার সুলতানা ১৯ মেট্রিক টন চালবোঝাই একটি ট্রাক বৃহস্পতিবার বিকেলে সিংহজানি খাদ্য গুদামে নিয়ে যায়।
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা এন এস আই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে চালগুলোর আর্দ্রতা বেশি এবং নিম্নমানের পঁচা চাল। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মাজহারুল ইসলাম সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে সিংহজানি খাদ্যগুদামে অভিযান চালান।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতিতে চালের আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে গ্রহণযোগ্য আর্দ্রতার মাত্রা ১৪ এর চাইতে বেশি ১৪ দশমিক ৫ মাত্রার আর্দ্রতা পাওয়া যায়। এতে করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে সরবরাহকৃত চাল নিম্নমানের প্রতীয়মান হওয়ায় তাৎক্ষণিক তার সরবরাহ আদেশ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই রাইস মিল কর্তৃপক্ষের চুক্তিবদ্ধ প্রতিনিধি আব্দুল মান্নানের সরবরাহকৃত চালের আর্দ্রতা পরীক্ষা করে নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়। এ সময় সিংহজানি খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও পরিচালনা কর্মকর্তা জিনাত শামছুন্নাহার সুলতানাসহ খাদ্যবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় চাল গ্রহণ না করে গুদাম থেকে ফেরত পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মাজহারুল ইসলাম খোলা কাগজকে বলেন, ‘জে এস এল রাইস মিলের সরবরাহকৃত চাল পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পরীক্ষা করে সরবরাহ করার জন্য সিংহজানি খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’