সেবা ডেস্ক: খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নজর এখন বাকি তিন সিটি নির্বাচনের দিকে। খুলনা ও গাজীপুরে অসহায় আত্মসমর্পণের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এখন রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে মরিয়া।
আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুলনা ও গাজীপুরের পর এই তিনটি নির্বাচনেও জয়ী হতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। তারা দেখাতে চায়, উন্নয়নের পক্ষে মানুষ নৌকায় ভোট দিচ্ছে ও দিবে।
আগামী ডিসেম্বরে সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন সিটির ভোট হবে আগামী ৩০ জুলাই। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্য দলের প্রার্থীরা।
সিলেট ও বরিশালে নিজ দল ও জোটের বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপি। এই দুই সিটিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী না মেনে অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
গতকাল সিলেটে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, বিএনপির শরিক দল জামায়াতের সিলেট মহানগরের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। জোটে এবং দলে দুই প্রার্থীরই কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। যে কারণে শুরুতেই বেকায়দা অবস্থায় পড়েছেন আরিফুল হক। ফলে আরিফুল হকের জন্য নির্বাচন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জোটে বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়েরও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জোটগত নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। জোট থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। চূড়ান্ত কোনো কথাবার্তাও হয়নি।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন শর্ত অনুযায়ী সিলেটে জামায়াতকে বিএনপির ছাড় দেওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি কথা রাখেনি। এ নিয়ে দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
এদিকে বরিশালে সিদ্ধান্ত না মেনে ২০ দলীয় জোটে থাকা দুই প্রার্থী মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মজিবর রহমান সরোয়ার দলীয় মনোনীত প্রার্থী। তবে জোটের শরিক খেলাফত মজলিস বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ কে এম মাহাবুব আলম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফলে সিলেটের মতো বরিশালেও বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আছে বিএনপি।
রাজশাহীতে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য পদত্যাগকারী মেয়র ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। রাজশাহীতে দলীয় চাপের মুখে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও দলীয় অন্তঃকোন্দল রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হকের সাথে বুলবুলের ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের খেসারত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দেওয়া লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন বিএনপির একাধিক নেতা।
এখন দেখার অপেক্ষা ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় তিন সিটি নির্বাচনে এসব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে কিভাবে বিএনপি জয়ের ছক কষে।