‘কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেপথ্যের কাহিনী’
এপ্রিল ১০, ২০১৮
সেবা ডেস্ক: -কোটার বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছেন তারা আসলে কতটা মেধাবী? আর কোটায় যারা নিয়োগ পাচ্ছে তারা কতটা মেধাহীন?
এমন তো নয় যে অষ্টম শ্রেণি পাস লোকজন কোটা সুবিধা নিয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাচ্ছে, আর এর পাশাপাশি মাস্টার্স পাশ করে কোটা না থাকায় উচ্চ শিক্ষিত লোকজন নিয়োগ বঞ্চিত হচ্ছে। যারা যে কোটায় চাকরি পাচ্ছে, এবং কোটাবিহীন যারা, উভয় সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের অধিকারী হিসাবে আবেদন করে। এটাই বাস্তবতা তাই নয় কি?
উভয়ের মধ্যে হয় তো কেউ ৬০ মার্ক পেয়ে পাস করেছে, আর কেউ একটু কম মার্ক পেয়ে পাস করেছে, এই তো পার্থক্য, কিন্তু উভয় ছাত্র পাস তো করেছে, উভয়ে একই মানের সনদ পেয়েছে, তাই না?
তাহলে মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে, মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে, এমন কোরাস বা প্রচারের উদ্দেশ্য কি?
এই অবস্থায় কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেপথ্যে আসলে কি আছে, তা নিয়ে একটু গভীরে যাওয়া যাক।
কোটা ব্যবস্থা বাতিল হলে সংবিধানের ২৯(৩) ‘ক’ ধারার বরখেলাপ হবে। কোটা ব্যবস্থা সংশোধন করা দরকার কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলই এতে হাত দেবে না। কারণ বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।
তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাগণ তো দেশ প্রেমের পরীক্ষায় পাস করেছেন। সময়মত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সর্বকালের সেরা মেধাবী তা প্রমাণ করেছেন। আবার কেন এটা নিয়ে বিতর্ক করতে হবে।
যারা একাত্তর সালে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, বা মেধার যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তার দায় কেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা নিবে?
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ কোটার বিরুদ্ধে বলে কিন্তু তারপরও বিশ্বব্যাংকের সর্বোচ্চ পদে আমেরিকান ছাড়া কেউ বসতে পারে না। আইএমএফের শীর্ষ পদেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে কেউ নিয়োগ পায় না।
কোটা ব্যবস্থা চালুর উদ্দেশ্য-কোটা পদ্ধতি কি ?
দেশের সর্বোচ্চ পরীক্ষা বিসিএস এর মাধ্যমে নারী ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী যাতে সমান সুবিধা নিতে পারে এই লক্ষ্যে সরকার বিসিএসে উত্তীর্ণদের (প্রিলিমিনারী, লিখিত ও মৌখিক –তিনটিতেই উত্তীর্ণ) মধ্যে থেকে নারী, উপজাতী বা পশ্চাৎপদ জেলাগুলোর অধিবাসী প্রার্থীদের ‘কোটা পদ্ধতি’র ভিত্তিতে চাকরী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয় ।
কোটাধারীরা কিভাবে পিছিয়ে পড়েছে তাহলে শুনুন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পক্ষে ছিল, তাদের বাড়ি-ঘর লুটপাট করা হয়েছে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, উপার্জনকারী ব্যক্তিদের হত্যা করা হয়েছে, এমতাবস্থায় উক্ত পরিবারগুলো স্বাধীন দেশ পেলেও সহায় সম্পদের দিক থেকে নিঃস্ব, অসহায় মানুষে পরিনত হয়। ফলে তাদের সন্তানরা স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে যায়।
অন্যদিকে যারা বিপক্ষে ছিল তাদের বেশিরভাগ ছিল লুটপাটের সাথে যুক্ত, আর যারা লুট-পাট করেনি, আর যাই হোক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যারা ছিল, তাদের মত বা তাদের পরিবারের মতো ক্ষতির শিকার হতে হয়নি। ফলে তাদের সন্তানরা অনুকূল পরিবেশে শিক্ষিত হয়ে পরবর্তীতে অধিকতর শিক্ষিত হয়েছে।
তাহলে তো বিবেকহীনতাও মেধা?
এমন মেধা তো কালোবাজারী, সন্ত্রাসী, লুটেরা মার্কা খলনায়ক শ্রেণির তো আছে এমনকি বাংলা ছবির খলনায়কেরও আছে!
আন্দোলন শুধু উল্টে-পাল্টে দে বাবা, লুটে-পুটে খাই। এর জন্য?
সেই সাথে কিছু মানুষ আছে, যারা ভাল মানুষের মুখোশ পড়ে ইনিয়ে, বিনিয়ে কথার বলার মাঝে, আসলে পুরনো এর্লাজি (৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ) চুলকানোর সুযোগ হাত ছাড়া করতে দ্বিধাবোধ করে না। প্রকৃত স্বাধীনতা চেতনার পক্ষের কেউ আর যাই হোক মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না। হয় তো না বুঝে কিছু লোক জড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু মাষ্টারমাইন্ড আসলে কি চায়?
ট্যাগস