এদিকে যারা ১২ থেকে ১৮ বছরের মেয়েদের নিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, সেই সব বাবা-মায়েরা কিন্তু মেয়ে পার করতে মরিয়া। একজন স্বামীহারা নারী তার নয় ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসেছিলেন শিবিরে। তিনটি মেয়ের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মতো। পাশের শিবিরে আদিনা বিবি গত চার মাসে তার দুই নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন শিবিরেরই দুই পাত্রের সঙ্গে।
পাত্রদের একজন দোকান দিয়েছে শিবিরে। অন্য জন এখানে ত্রিপল ছাওয়ার কাজ করেন। ১২ ঘণ্টার কাজে মজুরি ২৫০ টাকা। তিন মেয়ের জন্য হন্যে হয়ে এমন পাত্র খুঁজছেন ওই নারী।
শুধু নিরাপত্তার তাগিদেও শিবিরের বেকার ছেলেদের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। ২০ বছরের আব্দুলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে ১৬ বছরের আরিফার।
আরিফার মেয়ের বাবা বলেন ‘ছেলে-মেয়েকে খাওয়াতে পারি না। নিরাপত্তাও নেই। তাই আব্দুলের বাবার প্রস্তাব ফেরাইনি।’ আর আব্দুলের বাবার জবাব, ‘একটা রেশন কার্ড তো বাড়ল!’
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মী জানান, শরণার্থী শিবিরে যে সব মেয়েরা অভিভাবকহীন তাদের নিয়েই বেশি চিন্তা। নিজেদের ভবিষ্যতের চিন্তায় অনেকে ক্ষেত্রেই ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিচ্ছেন তারা।
তবে শিবিরের ভেতরে উদ্বাস্তু পরিবারের মধ্যে যেভাবে নাবালিকাদের বিয়ে হচ্ছে তাতেও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্বিগ্ন। শরণার্থী শিবিরে কাউন্সিলরের কাজ করা এক ব্যক্তি বলেন, বিয়ে নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি প্রতিদিনের ঘটনা। এই সব মেয়েদের পাচার হয়ে যাওয়ার ভয় বেশি।
প্রশাসনিক এক কর্মকর্তার ভাষ্য, শিবিরে থাকা বিবাহিতদের ওপরে নজর রাখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশিদের বিয়ে করে যে সব মেয়ে শিবির ছেড়েছেন, তাদের নিয়েই যত চিন্তা। কারণ তাদের উপরে নজর রাখা সম্ভব নয়। বিয়েটাও বেআইনি। ফলে এ সব তরুণীদের বিক্রি করে দিলে বা দেহ ব্যবসায় নামালে কিছুই করার থাকে না।
সূত্র: আনন্দবাজার