সেবা ডেস্ক: - কোরআন এর 'পবিত্র সুড়ঙ্গ' এই সুড়ঙ্গে রাখা হচ্ছে শত শত বস্তা নষ্ট কোরআন শরীফ, টানেলটা ঘুরে দেখছেন বিবিসি'র সাংবাদিক মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফ রক্ষণাবেক্ষণে সচেষ্ট থাকতে হয়। বাড়িতে রাখলেও আল কোরআনের পবিত্রতা যেন নষ্ট না হয়, তার জন্যে থাকে বিশেষ আয়োজন। কিন্তু দীর্ঘদিন পর তো কাগজে ছাপানো কোরআন নষ্ট হবেই। তখন এই পবিত্র গ্রন্থকে চাইলেই ফেলে দেওয়া যায় না। তাহলে কী করতে হবে?
পশ্চিম পাকিস্তানের একটি শহর এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েতায় দেখা গেলো সেই সমাধান। সেখানে মাটির অনেক গভীরে বানানো এক টানেলে রাখা হচ্ছে পুরনো, ছেঁড়া-ফাটা আর নষ্ট হয়ে যাওয়া কোরআন। ভিডিও-তে দেখুন।
এই দরজা গলে ভেতরে গেলেই মিলবে হাজার হাজার কোরআর। এগুলো সবই নষ্ট হয়ে গেছে। ভিডিও প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলমানদের বিশ্বাস পুরনো কোরআন অন্য নষ্ট দ্রব্যের মতো বাইরে ফেলে দেওয়া যায় না। পর্বতের নিচে বানানো হয়েছে সেই সুড়ঙ্গ। গোটা পাকিস্তান থেকে যাবতীয় নষ্ট কোরআন চলে আসে এখানে। পবিত্র গ্রন্থের হাজার হাজার কপি ভূগর্ভের এই স্থানে রাখা হয়।
প্রায় দুই মাইল চলে গেছে এই সুড়ঙ্গ। দুপাশে সারি সারি তাক করা হয়েছে। সেই তাকে স্থান পেয়েছে বস্তায় বস্তায় নষ্ট কোরআন। প্রতিটা বস্তায় ৮-১০টা কোরআন রাখা সম্ভব হয়েছে।
জাবাল-ই-নূর-উল-কোরআন এর আবদুল রাশিদ লেহরি বলেন, আমার বড় ভাই কোরআন কিনতে ভালোবাসতেন। তিনি অনেক কোরআন সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এখানে রাখা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আসলে আমরা বিপদেই পড়েছিলাম। পবিত্র গ্রন্থগুলোর কিছু গাড়িতে রাখতেন। কিন্তু অন্যখানে। কিন্তু সব তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরে তার কয়েক বন্ধুর পরামর্শে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু করি আমরা।
প্রতিদিনই এখানে বস্তায় করে পুরনো কোরআন চলে আসে। শত শত বস্তা ইতিমধ্যে জমা পড়ে রয়েছে। এগুলো আসলে পরীক্ষার পর টানেলের তাকে স্থান পায়। কারণ এগুলো পাতা এলোমেলো খুলে থাকে। ওগুলো গোছাতে হয়। আবার কিছু কোরআন মেলে যা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এগুলো মেরামত করে আবারো পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একেবারে ছেঁড়া-ফাটা থাকলে সেগুলোর স্থান হয় এই টানেলে।
এই টানেল তো এক সময় ভরে যাবে। তখন তারা আবারো টানেল বানাতে থাকবেন। এটা বানানো সময় এমনও দিন গেছে যখন গোটা দিনে মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার খোঁড়া সম্ভব হয়েছে। কারণ পাথর এতটাই শক্ত। স্রেফ গাঁইতি দিয়েই টানেলের মুখটাকে এগিয়ে নেওয়া হয়।
জাবাল-ই-নূর-উল-কোরআন পাকিস্তানের যেকোনো মানুষকে তার পুরনো কোরআন এখানে পাঠিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। পবিত্র গ্রন্থের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করেই এদের কবরস্থ করা হবে।
সূত্র : বিবিসি