হজে যাওয়ার খরচ গতবারের চেয়ে বাড়লো

Seba Hot News
হজে যাওয়ার খরচ গতবারের চেয়ে বাড়লো
সেবা ডেস্ক: - সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ গতবারের চেয়ে বাড়লো। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৮’ এবং ‘হজ প্যাকেজ-২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।

সচিবালয়ে ফিরে প্রেস ব্রিফিংয়ে  মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এবারের হজ প্যাকেজের বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, সুবিধার ধরন অনুযায়ী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে টাকার অঙ্কে হেরফের হবে।

 জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিতে এবার কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, প্রাক-নিবন্ধন করতে এনআইডি থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রবাসীরা পাসপোর্টের মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন করতে পারবেন।

প্রাক নিবন্ধন করেও যারা চূড়ান্ত নিবন্ধন করবেন না তাদের নিবন্ধনের মেয়াদ আরো এক বছর থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পর পর দুই বছর চূড়ান্ত নিবন্ধন না করলে ধরে নেয়া হবে তিনি হজে যেতে আগ্রহী নন। তিনি বলেন, এবার থেকে নিবন্ধনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।

রকারণ পাসপোর্ট করার সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। সরকারি- বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতি ৪৫ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে গাইড থাকবে। হজের দুই মাস আগে এসব গাইডের তথ্য হজ অফিসে দিতে হবে।

নিবন্ধন পরিবর্তনযোগ্য নয় জানিয়ে তিনি বলেন, মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রাক নিবন্ধনকারীদের মধ্যে তা প্রতিস্থাপন করা যাবে। তবে একটি এজেন্সির মোট হজযাত্রীর চার শতাংশের বেশি প্রতিস্থাপন করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার থেকে সরকার হজযাত্রীদের ট্রলি সরবরাহ করবে না। ট্রলি হজযাত্রীদের কিনতে হবে।

 বিমান ভাড়া বাড়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, ডলারের দাম বেড়েছে, সব মিলিয়ে খুব বেশি বাড়ানো হয়নি। গতবার মোট বিমান ভাড়া ছিল এক লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী নিতে পারবে।

কোনোক্রমেই এক ফ্লাইটে তিনটি এজেন্সির বেশি যাত্রী পাঠানো যাবে না। মক্কা থেকে দুই কিলোমিটারের বেশি দূরে বাসস্থান ভাড়া করলে হজ এজেন্সিগুলোকে গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে যারা হজ করেছেন বা হজে যাওয়ার ভিসা পেয়েও হজ করেননি তারা যদি এবার হজে যেতে চান তাহলে অতিরিক্ত দুই হাজার ১০০ রিয়েল পরিশোধ করতে হবে।

যারা হজ করেছেন তাদের হজে যেতে নিরুৎসাহিত করতেই এই অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন।

 সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৬০৭৩ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৫২২৯২ ক্রমিক নম্বর পর্যন্ত চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২১শে আগস্ট হজ হতে পারে। এদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে শিশু আদালতের ক্ষমতা দিয়ে ‘শিশু (সংশোধন) আইন, ২০১৮’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গতকালের বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শিশু আইন ২০১৩ সালের, খুব বেশি পুরনো না। এখানে একটু সমস্যা হচ্ছিল, শিশু আদালত গঠন নিয়ে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। এ ক্রাইসিস দূর করার জন্য সংশোধনীটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে আদালতের এখতিয়ার সমপ্রসারণ করা হয়েছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই মামলা থেমে না থাকে বা কেউ যেন বিলম্বিত বিচার ব্যবস্থার শিকার না হয়। তিনি বলেন, আইনের ১৬ ধারায় ১৬ (ক) নাম দিয়ে একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। সেটা হচ্ছে ম্যাজিস্ট্রেট অর্থ ফৌজদারি কার্যবিধির ধারায় ৬-এর উপধারা ৩-এ উল্লিখিত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট যার অপরাধ আমলে নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। শিশু আদালত বলতে বোঝাতে আইনের সঙ্গে সংঘাত জড়িত শিশুর যে কোনো অপরাধ বিচার করার জন্য প্রত্যেক জেলা শহরে শিশু আদালত নামে এক বা একাধিক আদালত থাকবে। এ আদালত আলাদাভাবে নেই। এ আইন হওয়ার পর থাকবে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন, ২০১৮’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি ২০০৪ সালের আইন।

 কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বিশেষে সবাই কর্মচারী নামে অবহিত হবেন। এটা একটা সংশোধনী। এখানে (খসড়া আইনে) ক্ষমতা অর্পণের একটি বিষয় এসেছে। চাঁদার শিডিউলে চাঁদা দেয়া হয় সেটা যাতে ওনারা (সরকারি কর্মচারী) বোর্ডের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে সময়ে সময়ে হ্রাস-বৃদ্ধি করতে পারেন সেই ক্ষমতা চাওয়া হয়েছে। এটাই মূলত মূল প্রস্তাব। তিনি বলেন, এটা যদি কার্যকর হয়, এখন যে রেইট আছে- কল্যাণ তহবিলের মাসিক চাঁদা এ পর্যন্ত দেয়া হতো মূল বেতনের এক শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫০ টাকা।

 এখন সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। যৌথ বীমার মাসিক সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ৪০ টাকা সেটা ১০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শফিউল আলম জানান, প্রস্তাবিত আইনে মাসিক কল্যাণ ভাতা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা, সাধারণ চিকিৎসা অনুদান সর্বোচ্চ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা, দাফনের জন্য ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, যৌথ বীমার এককালীন অনুদান এক লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে বস্ত্র আইন ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছর বস্ত্রখাতের রপ্তানি আয় মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ ছিল। তাই বস্ত্রখাতের গুরুত্ব বিবেচনায় ‘বস্ত্র আইন, ২০১৮’ করা হচ্ছে। এখানে একটি অধিদপ্তর থাকবে। বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করবেন। নিবন্ধন নবায়নের বিধানও রাখা হয়েছে আইনে।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top