৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে ফেলানী হত্যার ৭ বছর

S M Ashraful Azom
7 years of killing Felani on Kurigram border

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে আলোচিত সীমান্ত হত্যাকান্ড কিশোরী ফেলানী হত্যার ৭ বছর। দেশ-বিদেশে আলোচিত এ হত্যা কান্ডের বিচার ভারতের উচ্চ আদালতে গড়ালেও এখনও ন্যায় বিচার পায়নি তার পরিবার। ন্যায় বিচারের আশায় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে দুটি রিট পিটিশন দাখিল করে যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এর আগে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে দু’দফায় বেকুসর খালাস দেয় বিএসএফ’র বিশেষ আদালত।
৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে ফেলানী হত্যার ৭ বছর, ভারতের উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচারের আশায় পরিবার।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাটাতারের বেড়ায় নির্মমভাবে খুন হয় কিশোরী ফেলানী। ভারতের ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত ফেলানীর মরদেহ কাটাতারেই ঝুলে থাকে দীর্ঘ ৪ ঘন্টা। ফেলানীর ঝুলে থাকা লাশের ছবি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোতে সমালোচনার ঝড় তোলে। সেসময় বিজিবির দাবীর মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট ভারতের কোচবিহারের বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার কাজ শুরু হয়। ফেলানীর বাবা দুদফা বিএসএফ’র আদালতে স্বাক্ষী দিয়ে আসলেও ঐ বছর ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। রায় পুর্নবিবেচনার বিজিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মামলার পুনর্বিচারে আবারও অমিয় ঘোষ খালাস দেয় বিশেষ আদালত।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান, আমার মেয়ে ফেলানীকে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু এখনও আমি আমার মেয়ে ফেলানী হত্যার বিচার পাই না। আমি চাই আমার মেয়ে ফেলানীকে হত্যাকারী অমিয় ঘোষের যেন ফাসি হয়। তাহলে আমার ফেলানীর আত্মা শান্তি পাবে।

ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু জানান, বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে কন্যা হত্যার ন্যায় বিচার না পেয়ে ২০১৫ সালে ভারতের আইনজীবি অপর্নাভাট ও মানবাধিকার সংগঠন মাসুম’র সহায়তায় ভারতের উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করি। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রিট গ্রহন করে আগামী ১৮ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছে। আমি আশা করছি এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচার পাব। এখন ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি। এর আগে পরপর দুবার বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে দুইবার স্বাক্ষী দিয়ে আসলেও অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে দু’দফায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

ফেলানীর নির্মম হত্যাকান্ডের কথা এখনও ভুলতে পারেননি তার স্বজনরা। তাদের দাবী এ হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচারসহ সীমান্ত হত্যা বন্ধের।

এ ব্যাপারে ফেলানী হত্যায় ফেলানী বাবা নুরুল ইসলাম নুরুর আইন সহায়তাকারী কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরুর দুটি রিট গ্রহণ করে একাধিকবার শুনানীর দিন পিছালেও আগামী ১৮ জানুয়ারী শুনানীর দিন ধার্য্য করেছে। আমরা আশা করতেই পারি ভারতের সর্বোচ্চ আদালত ফেলানী হত্যা মামলায় একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিবে যেটা উভয় রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলকর হবে।

ফেলানী হত্যার পরেও থেমে নেই সীমান্ত হত্যা। এ মামলায় ভারতের উচ্চ আদালতে ইতিবাচক রায় হলে সীমান্তে আইন বহির্ভুত হত্যাকান্ড বন্ধ হবে এমনটাই আশা বাংলাদেশের মানুষের।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top