সেবা ডেস্ক: জামালপুরের বকশীগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় এক অধ্যক্ষকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ওই অধ্যক্ষ তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি (বি.এম) পরীক্ষার কেন্দ্রের
অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে গত বছরের ১৭.১১.২০১৭ ইং তারিখে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাসেল সাবরিন, ২৫.১০.২০১৭ ইং তারিখে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসান সিদ্দিক ও
২২.১০.২০১৭ ইং তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে প্রতিবেদনে সুপারিশ পাঠানো হয়।
পৃথক পৃথক ওই প্রতিবেদনে চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি (বি.এম) কেন্দ্র অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়।
কিন্তু কারিগরি শিক্ষাবোর্ড এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এটি যাচাই-বছাই এর জন্য এডিসি , ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সুপারিশের বিষয়টি সম্প্রতি মোবাইল ফোনে পুনরায় জানতে চাইলে ওই তিন কর্মকর্তা সুপারিশের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এরপর তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনে। জালিয়াতির ঘটনায় দোষ চাপানো হয় অত্র কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের উপর।
স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইউএনও আবু হাসান সিদ্দিক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ
ছানোয়ার হোসেন চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলামকে দায়ী করে গত ১৬ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।
কিন্তু চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
তবে তিনি জানিয়েছেন তার কলেজের কিছু শিক্ষক ভূয়া সনদ ব্যবহার করায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনাক্রমে যাচাই-বাছাই এর পর তাদের বেতন স্থগিত করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা জেলা প্রশাসকের সরণাপন্ন হলে জেলা প্রশাসক বিষয়টি দেখভালের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাসেল সাবরিনকে দায়িত্ব দেন।
গত ৩ জানুয়ারি অভিযুক্ত সাত শিক্ষকের সাকূল্য বেতন প্রদানের জন্য ওই কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে চাপ দেন।
এক পর্যায়ে এডিসি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামকে হুমকি প্রদান করেন। পরে এডিসি ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে সকল শিক্ষককে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করেন।
তিনি জানান, আমি আমার কলেজে বি.এম পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য আবেদনই করি নি। আমাকে বিপাকে ফেলতে ওই শিক্ষকরাই স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে
। কে বা কারা স্বাক্ষর জাল করেছে আর দোষ দেওয়া হচ্ছে আমার উপর। স্বাক্ষর জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নন বলেও তিনি দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসান সিদ্দিক জানান, এডিসি ও আমার স্বাক্ষর জাল করা মোটেও ঠিক হয় নি। তাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
বকশীগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান জানান, অধ্যক্ষকে দায়ী করে ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।