দেশে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ব্যাংক ব্যবস্থায় উদ্বৃত্ত তারল্যের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়ছে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এর মধ্যে একেবারে অলস পড়ে আছে ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, ঋণ চাহিদা না থাকায় ব্যাংকগুলো সব ধরনের আমানতে সুদহার কমিয়ে আনছে ব্যাংকগুলো। গত সেপ্টেম্বরে আমানতে গড় সুদহার নেমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মেয়াদি আমানতে সুদ দেয়া হচ্ছে সাড়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশ।
এ দিকে, ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে সরকারের ঋণ নেয়ার চাহিদাও কমেছে। আর রেপোর বিপরীতে চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো এখন টাকা রাখতে পারছে না। এ সব পরিস্থিতিতে ব্যাংক ব্যবস্থায় বর্তমানে উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ব্যাংকে নগদ টাকার টানাটানি না থাকলেও গত পাঁচ বছরে কখনোই কলমানিতে এত কম সুদে লেনদেন হতে দেখা যায়নি। গত বছর বেশির ভাগ সময়ে ৭ থেকে ৮ শতাংশ সুদে কলমানিতে লেনদেন হয়। ২০১৩ সালে গড় সুদহার ছিল ১০ থেকে ১২ শতাংশ। তার আগের দুই বছরও একই রকম সুদে লেনদেন হয়েছিল। তবে ২০১০ সালে ব্যাংকগুলোতে ব্যাপক তারল্য সংকট দেখা দেয়। ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর দেশের ইতিহাসে কলমানি রেট সর্বোচ্চ ১৯০ শতাংশে উঠে যায়। ওই দিন গড় সুদহার দাঁড়ায় ১৩৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। তখন ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের ব্যাপক টানাটানি ছিল।
জানা গেছে, বাজার চাহিদা বিবেচনায় ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে সুদহার কমিয়ে দিয়েছে সরকার। অক্টোবরে পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ডে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়েছে। আগের বছর অক্টোবরেও যা ছিল ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। একইভাবে অন্যান্য বিল ও বন্ডের সুদহারও কমে এসেছে। তবে এই সুদেও এখন সরকার খুব একটা টাকা নিচ্ছে না। এ ছাড়া, ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য থাকলে তারা রেপোর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদে টাকা রাখে। তবে বর্তমানে রেপোতে টাকার রাখার ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক আর রাখতে চাচ্ছে না।